ক্ষমতার অপব্যবহার করলেন প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন



স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিবালয় উপজেলার নয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, শিক্ষক হয়রাণিসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে একাধিক অভিযোগ দায়ের হলেও ইসমাইল হোসেন তা ভিন্ন খাতে নেয়ার অপতৎপরতা চালানোর ফলে ভূক্তভোগী মহলে দারুন ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, গত — সালে এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদানের পর তিনি তুচ্ছ ঘটনায় ৩ জন সিনিয়র শিক্ষককে চাকুরি ছাড়তে বাধ্য করেন। সিনিয়র শিক্ষক সীমা আক্তার আদালতের রায়ে চাকুরী ফিরে পেলেও অন্য দু’জন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। ইসমাইল হোসেন ইদানিং এ বিদ্যালয়ের আরেকজন সিনিয়র শিক্ষক মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলামের নৈমিত্তিক ছুটি সংক্রান্ত মনগড়া জটিলতা সৃষ্টির একপর্যায়ে কারণ দর্শাও নোটিশ প্রদান ও চার দিনের বেতন কর্তন করেন। বেতন কর্তনা না করার জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি-এসএমসি সভাপতিসহ সদস্য ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুরোধ জানালেও তিনি তা অগ্রাহ্য করেন। গত ৭ জুন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে ইসমাইল হোসেন ও জাহিদুল ইসলামের সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে বৈঠক হয়।

এতে পাশ^বর্তী ৮/১০টি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, এসএমসি সদস্য, শিক্ষানুরাগী, সংবাদিকসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, কোনো কারণ দর্শাও নোটিশের জবাব দেয়ার পর প্রধান শিক্ষক একক সিদ্ধান্তে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের সরকারী অংশ কর্তন করতে পারেন না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অবগত হয়ে এ দু’শিক্ষকের মাঝে সৃষ্ট ভুল বুঝাবুঝি মিটানোর পরামর্শ দেন। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ পরামর্শে এসএমসি সভাপতি, সদস্য ও শিক্ষানুরাগীদের অনুরোধে ইসমাইল হোসেন ও জাহিদুল ইসলামকে কোলাকুলি করিয়ে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দেন। তা সত্বেও জাহিদুলের নামে একের পর এক নোটিশ দিয়ে উক্ত প্রধান শিক্ষক নানা হয়রানি চালিয়ে আসছেন।


এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন জানান, নিয়মানুযায়ী জাহিদুরের নামে চিঠি দেয়া হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খবির উদ্দিন জানান, সিনিয়র শিক্ষক জাহিদুলের বেতন কর্তন ও অফিস করনিক বেনজির আহমেদকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বিভাগীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বিভিন্ন ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন শিবালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীরা। এ নিয়ে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট মহলে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

মানিকগঞ্জের নয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সেই আলোচিত প্রধান শিক্ষক মো. ইসমাইল হোসেন এক কান্ড করে ফের আলোচনায় এসেছেন। তিনি শিবালয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের করনিককে গালিগালাজ ও প্রহারে উদ্ধত্ত হলে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমির হস্তক্ষেপে শান্ত হন সেই প্রধান শিক্ষক। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কারনিক বেনজির আহমেদ শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।

শিক্ষা অফিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বৃত্তি-উপবৃত্তির বিলে সাক্ষর করাতে এসে প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন অফিসের লোকজনদের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলতে থাকেন। কারণ জানতে চাইলে বাক-বিতন্ড শুরু হয়। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক ইসমালইল হোসেন কারনিক বেনজিরের জামার কলার ধরে বাহিরে নিয়ে যেতে শুরু করেন। এ নিয়ে কোলাহল শুরু হলে পাশের অফিস থেকে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি গোলাম কবির বের হয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং উক্ত প্রধান শিক্ষকের হাত থেকে বেনজিরকে রক্ষা করেন।

এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. খবির উদ্দিন জানান, এ অফিসের কারণিক বেনজির আহমেদ ১৪ তারিখে নয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে আমার বরাবর একটি অভিযোগ দেন। এ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সাথে আলোচনা হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে হাজির হতে অসম্মতি জানান এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোকের মাধমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার কথা বলেন।

উল্লেখ্য, উক্ত প্রধান শিক্ষক নিজের নিয়োগ গ্রহণ, অর্থের বিনিময়ে অনুনোমদিত শ্খাায় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষক বরখাস্ত, বেতন কর্তন, ক্লাস রুটিন তৈরি স্বজনপ্রীতি, টিসি প্রদানসহবিভিন্ন কর্মকান্ডের কারণে ইতিপূর্বে পত্র-পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছেন।
নবীনতর পূর্বতন