ঘোড়াঘাটে আদিবাসী কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ: গ্রেফতার ৩

 


ঘোড়াঘাট দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
আধুনিক সমাজে নারীরা ক্রমশ নিয়মের বেড়িতে আবদ্ধ হচ্ছে। কারণ যৌন হয়রানি ও ধর্ষণ নারীর সম্ভ্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সচেতনতা নেই বলে ধর্ষণের সাজা কঠোরতা জানা থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত নারী ধর্ষিত হচ্ছে। এ ঘৃণ্য  অপরাধের সাজা মৃত্যুদণ্ড হওয়ার পরেও থামছে না অন্যায় কাজটি।

এরকম আরও একটি জঘন্যতম ঘটনা, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় এক আদিবাসী কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত আনুমানিক ৩টার সময় ঘোড়াঘাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের আব্দুর রহমানের লেচুর বাগানে এই ঘটনা ঘটে।
 
এজাহার সূত্রের তথ্যানুযায়ী, ধর্ষিতা কিশোরী (১৭) এর সাথে রাজু নামে এক যুবকের প্রায় দেড় বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর এই সম্পর্কের কথা যেকোনো ভাবে জানতে পারে এজাহার বর্ণিত লাবু মিয়া (২৮)। পরবর্তীতে ঐ আদিবাসী কিশোরীর মোবাইল নাম্বার যোগার করে বিভিন্ন সময়ে তার প্রেমিক রাজুর পরিচয়ে কথা বলতে থাকে। এক পর্যায়ে কিশোরীকে, শনিবার ৩০ জানুয়ারি রাত তিনটার সময় প্রেমিক রাজুর পরিচয়ে মোবাইলে কথা বলে বাড়ির পার্শ্ববর্তী আব্দুর রহমানের লেচুর বাগানে ডেকে আনে। 
 
কিশোরী উক্ত স্থানে উপস্থিত হয়ে তার প্রেমিকের বদলে অন্য ছেলেদের দেখতে পেয়ে চিৎকার দিয়ে স্থান ত্যাগ করার সময় ধর্ষক লাবু এবং দুই সহযোগী আশরাফুল ও ওমর ফারুক কিশোরীকে জোরপূর্বক আটকিয়ে মাটিতে ফেলে মুখ চেপে ধরে উক্ত স্থানেই পালাক্রমে গণধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।

এদিকে ধর্ষিতার পরিবার তাদের মেয়েকে বাড়িতে না পেয়ে অনেক খোঁজা-খুঁজির পর সকালবেলা বাড়ির পাশের লিচুর বাগানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে এবং মেয়ের মুখে পুরো ঘটনা শুনে থানায় গিয়ে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গণধর্ষনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে।

উক্ত ঘটনায় পুলিশের পৃথক কয়েকটি টিম অভিযান চালিয়ে ১/২ ঘন্টার মধ্যে তিন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ধর্ষকরা হলো, ঘোড়াঘাট উপজেলার ভোতরা পাড়া (ঘুঘুরা মৌজা) গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে লাবু মিয়া (২৮), এবং একই গ্রামের আহাম্মদ আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম (৩৫) ও ঘোড়াঘাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বাউপুকুর গ্রামের বেল্লাল হোসেনের ছেলে ওমর ফারুক (২১)।

ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আজিম উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, রবিবার (৩১ জানুয়ারী) সন্ধায় ধর্ষিতাকে নিয়ে তার মা থানায় এসে মামলা দায়েরের পরপরই পৃথক পৃথক স্থান অভিযান চালিয়ে তিন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। ওই কিশোরীর প্রেমিক রাজুর সাথে ধর্ষকদের কোন সম্পর্ক আছে কিনা সে বিষয়টিও আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি  এবং এই ঘটনার বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
 
 
অফিসার ইনচার্জ আরও জানান,  আসামীদেরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গণধর্ষনের অভিযোগে, ১লা ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে দিনাজপুরের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ধর্ষিতাকে মেডিকেল চেকআপ করানোর জন্য দিনাজপুর আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং সম্পূর্ণ তদন্তের জন্য উভয়ের ডিএনএ টেষ্ট করানো হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন