শহীদ মিনারের পবিত্রতা নষ্ট করে জুতা পায়ে দৌড়াদৌড়ি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ পুস্পস্তবক কাড়াকাড়ি


প্রতিবেদক  -  মাসুদুর রহমান
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে  শহীদ মিনারের পবিত্রতা নষ্ট করে জুতা পায়ে দৌড়াদৌড়ি ও জুতা পায়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ এবং পুস্পস্তবক কাড়াকাড়ির ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধারা,রাজনৈতিক এবং সচেতন মহল সহ সবার মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

 

মাইকে জুতা পায়ে শহীদ মিনারের পাদদেশে উঠার কোন নিষেধ করা হয়নি। দেখভাল করার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।২১ ফেব্রুয়ারী সকালে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে দৌড়াদৌড়ি ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ এবং পুস্পস্তবক কাড়াকাড়ির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

 


 
জাানা যায়,সরিষাবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে  মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি পালনের জন্য সরকারি বেসরকারি ,রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের মানুষ প্রভাত ফেরীতে সকল ভাষা সৈনিক ও ভাষার শহীদদের প্রতি পৌর এলাকার গণ ময়দান মাঠে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। 

 

এরপরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গণ ময়দান মাঠে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহীদদের প্রতি অর্পিত শ্রদ্ধাঞ্জলি কাড়াকাড়ি করে নিয়ে যায়।  উপজেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন পাঠান সহ সবার নজরে পড়লে পুলিশ প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

 
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট যোগদানের পর ২০২২ সালের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বসার জায়গা অপ্রতুলসহ অব্যবস্থাপনার অভিযোগে উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠান বর্জন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা । ইউএনও ক্ষমা প্রার্থনা করলে দুই ঘণ্টা পর অনুষ্ঠানে যোগ দেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। 

১৬ এপ্রিল সকালে ইউএনও কার্যালয়ে রহস্যজনক অগ্নিকান্ড,১৬ আগস্ট শূন্য হওয়ার পর ইউএনও উপমা ফারিসা অতিরিক্ত এসিল্যান্ডের দায়িত্ব পাওয়ার পরেই ১৮ ডিসেম্বর রাতে উপজেলা ভূমি অফিস ও পার্শ্ববর্তী কামরাবাদ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চুরি হয়। 

 

জানালার গ্রিল ও আলমারির তালা এবং অফিসের কলাপসিবল গেট, দরজা ও ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র তছনছ ও চুরি করে নেয় চোরচক্র। ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভূমি অফিসে পুনরায় চোর প্রবেশের চেষ্টা চালায়। ঘটনাটি প্রথমে ধামাচাপা দেওয়া চেষ্টার পর ফাঁস হলেও রহস্যজনক কারণে এখনো ঘটনার ক্লু উদ্ঘাটন হয়নি। অগ্নিকান্ড ও চুরির ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্ন ও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। 

উপমা ফারিসার অপসারণ এর দাবীতে নাগরিক কমিটির আয়োজনে ২৩ সালের ২১ জানুয়ারী  দুপুরে পৌরসভার সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে প্রধান প্রধান সড়কে ঝাড়ু মিছিল করেন সহস্রাধিক নারী-পুরুষ।

  
সরিষাবাড়ী সরকারী পাইলট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আ: রউফ জানান, শুধু দু:খ প্রকাশ করলে কি হয়? নিশ্চয়ই কাওকে বা কোন কমিটিকে দায়িত্ব দেখা ছিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। শহীদ মিনার এবং  স্মৃতি সৌধের পবিত্রতা রক্ষা করা একান্ত আবশ্যক। নইলে জাতি বিবেকের কাছে অপরাধী থাকবে।


মুঠোফোনে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মহব্বত কবীর জানান,ফুল কাড়াকাড়ি দেখে পুলিশ সাথে সাথেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

 
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন পাঠান বলেন, আমাদের আগামী প্রজন্মকে শহীদ মিনার সম্পর্কে অবগত করা দায়িত্ব¡ ও কর্তব্য। প্রতিটি পরিবার হতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শিখাতে হবে শহীদ মিনার কি ? কিভাবে শহীদ মিনারের উঠতে হয় এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে হয়।

 
তবে বিষয়টি একটি দুঃখজনক এবং বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপমা ফারিসা।
মাসুদুর রহমান

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন