October 13, 2025
Screenshot 2025-03-19 221724

২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেটে বাড়ির মালিকদের কাছ থেকে কর আদায় নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন সাংবাদিকেরা। একই সঙ্গে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন তাঁরা। আজ বুধবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে এক প্রাক্‌–বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব দেন সাংবাদিকেরা।

আলোচনায় অর্থ উপদেষ্টা জানান, আগামী বাজেট অহেতুক বড় হবে না। এ বাজেট হবে বাস্তবমুখী। আর বাজেট বক্তব্যে থাকবে না কথার ফুলঝুরি। কোনো মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হবে না। প্রাক্‌-বাজেট আলোচনায় ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিকেরা অংশ নেন।

অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার সূচনা বক্তব্য দেওয়ার পর গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা একে একে তাঁদের পরামর্শ দেন। সবার শেষে কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকারও খুব একটা বড় হবে না বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বেসরকারি খাতের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর পদক্ষেপ থাকবে আগামী বাজেটে। শুধু তা–ই নয়, মূল্যস্ফীতি কমানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং আয় বৃদ্ধির চেষ্টাও থাকবে।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আগে যেসব কাজ করার কথা বলা হতো, পরে সেগুলো হতো না। আমরা এ ব্যাপারে; অর্থাৎ প্রভাব ও বাস্তবায়নের ব্যাপারে নজরে রাখব। আর আগে বাজেট বক্তৃতা ২০০ থেকে ৩০০ পৃষ্ঠা হতো। এবার তা ৫০ থেকে ৬০ পৃষ্ঠার বেশি হবে না।’

আগামী বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে ভাতার পরিমাণ কিছু বাড়ানোর কথা জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সময় সংক্ষিপ্ত। এ সময়ে মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি বিষয়ে নজর দিতে পারব না। কারণ, এটা আমাদের ম্যান্ডেট নয়।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ এড়াতে পারব না। পাঁচ থেকে ছয়টি দেশ আমাদের দিকে তাকিয়ে। এতে আমাদেরও গৌরব হবে।’

সাংবাদিকদের পরামর্শ

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, দক্ষ জনবল সৃষ্টি, ভ্যাটের একক হার, ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ টাকা করা, ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তোলা, সংবাদপত্রশিল্পের জন্য শুল্কছাড়, আয়কর দেওয়ার ক্ষেত্রে কালোটাকার মালিকদের তুলনায় সৎ করদাতাদের প্রতি অন্যায্য না করা, ট্রেডিং করপোরেশন আব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা, রেশনপদ্ধতি চালু করা, বাড়িওয়ালাদের কাছ থেকে কর আদায় নিশ্চিত করা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে নজর বৃদ্ধি, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইন পোর্টালগুলোর আয়ের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন সাংবাদিকেরা।

যুগান্তর–এর সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর অর্থনীতিতে যে চ্যালেঞ্জ আসে, তা মোকাবিলায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, একসময় রেশন দেওয়া হতো। ভারতে এখনো দেওয়া হয়। রেশনব্যবস্থা চালুর কথা ভাবা যেতে পারে।

দেশে কর্মসংস্থানের প্রকৃত তথ্য পাওয়ার জন্য সরকার যাতে ব্যবস্থা নেয়, সেই পরামর্শ দেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন। তিনি বলেন, বাজেটের আকারের সঙ্গে বাজেট বক্তব্যের আকারও বাড়ছে। বাজেট বক্তব্যেও সংস্কার দরকার।

সেবা খাত হওয়া সত্ত্বেও সংবাদপত্রশিল্প থেকে সরকার অন্য সব খাতের মতোই কর আদায় করে বলে জানান সমকাল–এর বাণিজ্য সম্পাদক জাকির হোসেন। তিনি বলেন, এক মাস চলতে পারে, অন্তত তেমন হারে যেন সামাজিক সুরক্ষা খাতের আওতায় ভাতা দেওয়া হয়।

আলোচনায় আরও অংশ নেন ইংরেজি দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস–এর সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, দৈনিক খবরের কাগজ–এর সম্পাদক মোস্তফা কামাল, বেসরকারি টিভি চ্যানেল ডিবিসির সম্পাদক লোটন একরাম, জাগো নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক কে এম জিয়াউল হক, চ্যানেল আইয়ের বার্তা সম্পাদক মীর মাসরুর জামান, যমুনা টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক শামীম জাহেদী, রাশেদ কাঞ্চন, কাওসার রহমান প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *