October 13, 2025
Screenshot 2025-03-19 222335

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মানেই এখন রিলসের ছড়াছড়ি। ফেসবুক, ইউটিউব থেকে শুরু করে টিকটক, ইনস্টাগ্রাম—প্রতিটি মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন নামে আধিপত্য বিস্তার করে আছে ছোট ছোট ভিডিও। রিলস কেবল তরুণদের নয়, সব বয়সীর কাছেই জনপ্রিয়। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিলস দেখা তো এখন অনেকের নিত্যদিনের রুটিনের অংশ। ঘুমানোর আগে টানা রিলস দেখা শুধু মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নয়, প্রভাব ফেলছে শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরও। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে ঘুমানোর আগে টানা রিলস দেখার ফলে বাড়ছে হাইপারটেনশনের ঝুঁকি।

মোবাইল ফোন ছাড়া একটা দিন কাটাতে গিয়ে যা হলো

সম্প্রতি বিভিন্ন বয়সের ৪ হাজার ৩১৮ জনের ওপর চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে এই ফলাফল। মূলত ঘুমাতে যাওয়ার আগে রিলস দেখার সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, গবেষণায় খুঁজে বের করার চেষ্টা ছিল সেটি। সেখানে এই দুটি বিষয়ের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পান চীনের হেবেই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে ঘুমানোর আগে টানা রিলস দেখলে হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে তরুণ ও মধ্যবয়সীদের এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

রাতে ঘুমানোর আগে টানা রিলস দেখার ফলে বাড়ছে হাইপারটেনশনের ঝুঁকি

বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর রিলসের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে করোনাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয়তা পায় শর্ট ভিডিও। জেন-জি ও জেন আলফার মনোযোগ ধরে রাখতে না পারার পেছনে সবচেয়ে বড় দায় দেওয়া হয়েছে রিলসকে। সঙ্গে কমছে চিন্তার খোরাক জোগানো সৃজনশীল চর্চার পরিধি ও স্থায়িত্ব। রিলস ও স্ক্রলিংয়ের নিচে চাপা পড়ে ‘ব্রেন রট’ হওয়ার দশা অনেকের। কিন্তু ঘুমাতে যাওয়ার আগে রিলস দেখার পরিণাম আরও ভয়াবহ।

আপনার ফোন যে টয়লেট সিটের চেয়েও বেশি নোংরা, জানেন?
স্ক্রিন বা পর্দার দিকে একটানা তাকিয়ে থাকা যে কারও জন্যই ক্ষতিকর। সেটা হোক টেলিভিশন দেখা, ভিডিও গেম খেলা কিংবা কম্পিউটারের সামনে বসে টানা কাজ করা। এসব কাজের সময় সামান্য হলেও কিন্তু শরীর নড়াচড়া হয়। কিন্তু ঘুমাতে যাওয়ার আগে রিলস দেখার সময় নড়াচড়ার কোনো অবকাশই থাকে না। বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে অনেকেই রিলস দেখেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দীর্ঘক্ষণ একইভাবে থাকার কারণে নড়াচড়া হয় না বললেই চলে। ফলে শরীর হয়ে পড়ে আড়ষ্ট। রক্ত চলাচলও হয়ে পড়ে স্তিমিত। স্বাভাবিকভাবে শরীরে দানা বাঁধে হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা। তবে এভাবে দীর্ঘক্ষণ রিলস দেখার সময় শরীরের সিম্পেথেটিক নার্ভাস সিস্টেম কিন্তু আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে ভিডিও দেখার সময় হৃৎস্পন্দন তুলনামূলক বেড়ে যায়। টানা একই কাজ করলে এর প্রভাব হতে পারে ভয়াবহ।

রিলস কেবল তরুণদের নয়, সব বয়সীর কাছেই জনপ্রিয়
রিলস কেবল তরুণদের নয়, সব বয়সীর কাছেই জনপ্রিয়ছবি: পেক্সেলস
হেবেই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা অবশ্য প্রতিকারের উপায়ও বাতলে দিয়েছেন। যতই রিলস দেখুন না কেন, আসক্ত হয়ে পড়া চলবে না। ঘুমাতে যাওয়ার আগে ‘স্ক্রিন টাইম’ ঠিক করে নিন। প্রয়োজনে মুঠোফোন দূরে রেখে ঘুমাতে যান। এতে ঘুম যেমন ভালো হবে, শরীরও ভালো বিশ্রাম পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *