October 13, 2025
Screenshot 2025-04-01 215107

ঈদের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় পৌনে দুই লাখ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার।

সাধারণত প্রতিবছরই ঈদের দ্বিতীয় দিন জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ব্যাপক সমাগম ঘটে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, আজ সারা দিন চিড়িয়াখানায় একইভাবে লোকজন এসেছে। সারা দিন ভেতরে মানুষ প্রবেশ করেছে, বের হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে হাঁটার মতো অবস্থা ছিল না। ভেতর-বাহির একই অবস্থা। ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে।

আজ দুপুরে দেখা যায়, চিড়িয়াখানার দিকের সড়কে ব্যাপক যানজট। দীর্ঘ সময় লোকজনকে যানজটে বসে থাকতে হচ্ছে। অনেকেই বাস থেকে নেমে হেঁটে চিড়িয়াখানায় যাচ্ছেন।

একদিকে চিড়িয়াখানার রাস্তায় যেমন ব্যাপক যানজট, অন্যদিকে এই সড়কের ফুটপাত প্রশস্ত হলেও অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ দোকান বসায় দর্শনার্থীদের হাঁটতেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। প্রচুর মানুষ ফুটপাতে থাকায় স্বাভাবিকভাবে হাঁটাও যাচ্ছিল না।

ফুটপাত দিয়ে ভাগনের হাত ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন মো. আরিফ নামের এক ব্যক্তি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রচণ্ড যানজট, গাড়ি এগোয় না। এদিকে তাঁর ভাগনে বাসের ভেতরে গরমে অস্বস্তিবোধ করছিল। তাই হেঁটে রওনা হয়েছেন।

মিরপুর-১ নম্বর এলাকার সনি সিনেমা হল এলাকা থেকে চিড়িয়াখানা পর্যন্ত আসতে অনেকেরই এক ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে।

রাজধানীর কামারপাড়া এলাকা থেকে মো. জুয়েল রানা তাঁর তিন ভাই ও তাঁদের পাঁচ সন্তানকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় এসেছেন। তাঁরা সনি সিনেমা হল এলাকা থেকে বাসে ওঠেন। যানজটের কারণে একপর্যায়ে বাস থেকে নেমে যান। জুয়েল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাস থেকে নেমে এক কিলোমিটারের মতো হেঁটে এসেছি। বাচ্চাদের নিয়ে হাঁটা যায় না। চিড়িয়াখানা পর্যন্ত আসতে এক ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে।’

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এখানে বাঘ, ভালুক, হরিণ, সিংহ, বানর, জলহস্তী, কুমির, সাপ, ইম্পালা, গয়াল, লামা, ময়না, টিয়া, ক্যাঙারু, জিরাফ, জেব্রা, হাতি, ময়ূর, উটপাখি, ইমু, শঙ্খচিল, কুড়াবাজ, তিলাবাজ, গন্ডার, হায়েনাসহ ১৩৬ প্রজাতির ৩ হাজার ৩৪টি প্রাণী ও পাখি রয়েছে।

প্রাণী ও পাখির প্রতি আকর্ষণের জায়গা থেকে ঈদের সময় চিড়িয়াখানায় বহু শিশু-কিশোরের আগমন ঘটে। যেহেতু শিশু-কিশোরেরা এখানে আসতে চায়, সে কারণে বহু পরিবারের সমাগম ঘটে।

ঢাকার অদূরে সাভার থেকে এক ছেলে, এক মেয়ে, শাশুড়ি ও দেবরকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় এসেছিলেন ইতি খন্দকার। তাঁরা সকাল সাড়ে ৯টায় উবারে রওনা দিয়ে সকাল ১০টায় চিড়িয়াখানায় পৌঁছান। ইতি খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাচ্চারা অনেক আনন্দ করেছে। শাশুড়িও মজার মানুষ, তিনিও আনন্দ করেছেন। আমরাও ঘুরলাম। সব মিলিয়ে চিড়িয়াখানায় আসা আনন্দময় হয়েছে।’

চিড়িয়াখানা দেখার জন্য দিনাজপুর থেকে এসেছিলেন আল আমিনসহ ১১ জন। আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, শুধু চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখার জন্য পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে এত দূর এসেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *