
রাস্তায় গাড়ি নেই। মানুষেরও দেখা মিলছে না। রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করার পর এখন কারফিউ চলছে নেপালজুড়ে। অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে চাপা আতঙ্ক কাজ করছে নেপালবাসীর মধ্যে। যদিও পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
বুধবার সকাল থেকে নেপালে বড় ধরনের কোনো অশান্তির ঘটনা না ঘটলেও চলছে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ। কাঠমান্ডুর পাশের জেলায় সংঘর্ষে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। অন্যদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নেপালের দায়িত্ব নিয়ে নেপালের সেনাবাহিনী এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, যত দিন পর্যন্ত না নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে, তত দিন দেশের শাসনভার চালাবে তারা। কারফিউ দিয়ে নতুন সরকার গঠনের চেষ্টা চলছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আলোচনায় আছেন কাঠমান্ডুর সিটি মেয়র বালেন্দ্র শাহ।
মঙ্গলবার দুপুরে দেশটির রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেলের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন কেপি অলি। এরপর শোনা যায় হেলিকপ্টারে নেপাল ছেড়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। আশ্রয় নিয়েছেন কাতারে। পরে স্থানীয় সাংবাদিক প্রজ্জল অলির মাধ্যমে জানা যায়-
নেপালেই আছেন তিনি।
নেপাল স্পোর্টস জানালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রজ্জল অলি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশ ছাড়েননি। এই মুহূর্তে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় তাদের ব্যারাকে আছেন। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এই মুহূর্তে অনেক মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তারা আশ্রয় নিয়েছেন। যেমনটা বাংলাদেশে হয়েছিল ২০২৪ সালের আগস্টে। ৫ আগস্ট বাংলাদেশে সরকার পতনের পর অনেক মন্ত্রী, আমলা ও প্রসাশনের অনেকেই আশ্রয় নিয়েছিলেন ক্যান্টনমেন্টে।
ছাত্র-যুব আন্দোলনে সোমবার এবং মঙ্গলবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় নেপালে। কাঠমান্ডু থেকে বিদ্রোহের সূত্রপাত হলেও তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে নেপালজুড়ে। হাজার হাজার বিদ্রোহী হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান তারা।
মঙ্গলবার রাতেই আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন নেপালের সেনাপ্রধান অশোকরাজ সিগডেল। বিক্ষোভকারীদের দাবি-দাওয়া কী, তা জানাই উদ্দেশ্য ছিল ওই বৈঠকের। কাঠমান্ডু পোস্টের সাংবাদিক দীপক পাউডেল জানিয়েছেন,
বুধবার নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেলের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি দলের বৈঠকে বসার কথা। সেই বৈঠকে মধ্যস্থতা করবে নেপালের সেনাবাহিনী। আশা করা হচ্ছে, ওই বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তৈরি হতে পারে নতুন মন্ত্রিসভা।
নেপালে পুরোনো প্রজন্মের রাজনীতিবিদদের প্রতিনিধিত্ব করেন কেপি শর্মা ওলি, শের বাহাদুর দেউবা, পুষ্পকমল দাহাল (প্রচন্ড) প্রমুখ। তরুণদের ওপর গুলি চালানোর মতো সহিংস দমননীতি অনুসরণ করে ওলি সরকার নিজের পতনের পথ নিজেই তৈরি করে দেয়। সরকারবিরোধী এ আন্দোলনের নেপথ্যে অন্যতম কারিগর কাঠমান্ডুর সিটি মেয়র বালেন্দ্র শাহ। ২০২২ সালে স্বতন্ত্রভাবেই মেয়র নির্বাচিত হন ৩৫ বছরের এই তরুণ তুর্কি
নেপালে পুরোনো প্রজন্মের রাজনীতিবিদদের প্রতিনিধিত্ব করেন কেপি শর্মা ওলি, শের বাহাদুর দেউবা, পুষ্পকমল দাহাল (প্রচন্ড) প্রমুখ। তরুণদের ওপর গুলি চালানোর মতো সহিংস দমননীতি অনুসরণ করে ওলি সরকার নিজের পতনের পথ নিজেই তৈরি করে দেয়। সরকারবিরোধী এ আন্দোলনের নেপথ্যে অন্যতম কারিগর কাঠমান্ডুর সিটি মেয়র বালেন্দ্র শাহ। ২০২২ সালে স্বতন্ত্রভাবেই মেয়র নির্বাচিত হন ৩৫ বছরের এই তরুণ তুর্কি। তাকে নিয়েই এখন স্বপ্ন দেখছেন জেন- জি প্রজন্ম।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তরুণরা এখন সরাসরি কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন- এসো বালেন্দ্র, আমাদের এই সংকট থেকে রক্ষা করো। তারা জানিয়েছেন- এবারের আন্দোলন শুধু সরকারের বিরুদ্ধে নয়- এটি একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য সংগ্রাম। এই সংস্কৃতির মূল ভিত্তি হবে জবাবদিহিতা, সুশাসন ও নৈতিকতা। আর সেই নতুন নেপালের চালকের আসনে গোটা জাতি বালেন্দ্র শাহকে দেখতে চায়।