October 16, 2025
tbn24-20251016120515-1668-germany - 2025-10-16T180036.707

ফিলাডেলফিয়ার বড় হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন নাহলেও প্রতি সপ্তাহেই এই ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত রোগী দেখা যাচ্ছে।

প্রাণীদের জন্য তৈরি শক্তিশালী ওষুধ জাইলাজিন এখন অ্যামেরিকা জুড়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। যার ফলে তীব্র স্বাস্থ্য সংকট ও অতিরিক্ত মাত্রায় মাদক গ্রহণজনিত মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে।

‘ট্র্যাঙ্ক’ নামে পরিচিত এই সেডেটিভটি সাধারণত ফেন্টানিল এর সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়, যা এর নেশার তীব্রতা ও স্থায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।

২০২৩ সালে,অ্যামেরিকার ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিইএ) তাদের পরীক্ষায় পাওয়া ফেন্টানিল পাউডারের ৩০ শতাং এবং ফেন্টানিল ট্যাবলেটের ৬ শতাংশে -এ জাইলাজিনের উপস্থিতি শনাক্ত করে।

বর্তমানে ‘ট্র্যাঙ্ক’ মহামারির কেন্দ্রস্থল হিসেবে বিবেচিত ফিলাডেলফিয়া শহরে ২০২৩ সালে মোট অনিচ্ছাকৃত ওভারডোজজনিত মৃত্যুর ৩৮ শতাংশ ক্ষেত্রে জাইলাজিনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

ফিলাডেলফিয়ার রথম্যান অর্থোপেডিকস এবং ড্রেক্সেল ইউনিভার্সিটির অর্থোপেডিক সার্জন এবং ওপিওয়েড ব্যবহার গবেষক আসিফ ইলিয়াস দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্টকে জানান, ট্রাঙ্ক সংকট কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগেও আমরা জাইলাজিন-সংক্রান্ত ক্ষতসহ রোগী দেখতে পাইনি। তবে এখন ফিলাডেলফিয়ার বড় হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন নাহলেও প্রতি সপ্তাহেই এই ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত রোগী দেখা যাচ্ছে।’

জাইলাজিন কী?

জাইলাজিন মূলত একটি ওষুধ, যা প্রথম ১৯৬২ সালে মানুষের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। পরে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এটি প্রাণীদের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। ২০০০-এর দশকের শুরুতে পুয়ের্তো রিকোতে এটি স্ট্রিট ড্রাগ হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়।

জাইলাজিনের ব্যবহার প্রায়শই ফেন্টানিলের সঙ্গে মিশিয়ে করা হয়, যা ফেন্টানিলের স্বল্পস্থায়ী নেশাকে দীর্ঘায়িত করে। এটি শরীরের পেশি শিথিল করে, ব্যথা কমায় এবং স্নায়ুতন্ত্রকে ধীর করে, ফলে ব্যবহারকারী ‘জোম্বি’র মতো অবস্থা অনুভব করে।

জাইলাজিনের বিপজ্জনক প্রভাব

জাইলাজিন হৃদস্পন্দন ধীর করা, রক্তচাপ কমানো এবং শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করতে পারে, কারণ এটি স্নায়ুতন্ত্রে নোরএপিনেফ্রিনের মাত্রা কমায়। এছাড়া এটি রক্তনালী সংকুচিত করে, যার ফলে ত্বকে গুরুতর ক্ষত তৈরি হয়, যা জাইলাজিন ব্যবহারের সবচেয়ে পরিচিত লক্ষণ।

জাইলাজিনের ক্ষত মাংস খাওয়া ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের মতো হতে পারে এবং কখনও কখনও অঙ্গচ্ছেদের প্রয়োজন পড়ে। অধিকাংশ ব্যবহারকারী এটি হাত বা পায়ে ইনজেকশন করে, যেখানে ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়।

কিছু ক্ষেত্রে, টিস্যু নষ্ট হওয়ার কারণে অঙ্গ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে, হাড় দেখা যায় এবং জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।

ইলিয়াস বলেন, ‘যদি কেউ সুস্থ হওয়ার পর আবার ইনজেকশন শুরু করে, তাহলে সার্জারি ও পুনর্গঠন শেষ পর্যন্ত কাজে লাগে না, এবং এতে সময় ও অর্থ উভয়ই নষ্ট হয়।’

এক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা রোগীকে স্বাভাবিক রুটিনে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে, তবে পেশি, স্নায়ুর স্থায়ী ক্ষতি হলে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *