
নড়াইল সদরে খন্দকার মিরন আলী নামের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী দোকানীকে ৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়ায় জেলা প্রশাসনের এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে উপজেলার হবখালী ইউনিয়নের পাজারখালি বাজারে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার(১৬ অক্টোবর) সকালে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক শোয়েব মিনা, হবখালী ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ইব্রাহিম হোসেন লিটু, পাজারখালী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি শাহাদাত বিশ্বাস, ব্যবসায়ী খন্দকার আহসানুল সাঈদ বাবু প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, বুধবার বিকেলে পাজারখালী বাজারে বাজার তদারকি কাজে যান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার মো. বদিউজ্জামান। ওই বাজারের খন্দকার মিরন আলী নামের এক প্রতিবন্ধীর মুদি দোকানে যান তিনি। এসময় দোকানে উপস্থিত ছিলেন না মিরন। তিনি নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। দোকানে থাকা তার এক কর্মচারী অভিযান দেখে ভয়ে দৌড় দেন। খবর পেয়ে মিরন সেখানে উপস্থিত হলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বদিউজ্জামান তাকে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে চলে যান। কী কারণে তাকে নিয়ে যাচ্ছেন তা বলেননি। পরে স্থানীয়রা যোগাযোগ করে জানতে পারেন মিরনকে ৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
শাহাদাত হোসেনের অভিযোগ, সহকারী কমিশনার মিরনের দোকানে ঢোকেননি, কোনো কিছু যাচাই-বাছাইও করেননি। মিরন দোকানে আসার পরই তাকে নিয়ে গিয়ে পাঁচদিনের জেল দেওয়া হয়েছে।
ইউপি সদস্য ইব্রাহিম বলেন, মিরনের কোনো অপরাধ নেই। মিরনের কর্মচারী ছোট মানুষ, সে ভয়ে দৌড় দিছে। তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মিরনকে আইন বহির্ভূতভাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা সবাই অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট কোনো কথাই শোনেননি। আমি মনে করি, মিরনের ওপর জুলুম করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার মো. বদিউজ্জামানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারিক কার্যক্রম নিয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি কোনো কর্মকর্তাই। তবে, ওই কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারায় মিরনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তারা (ভুক্তভোগীর পক্ষে) ভ্রাম্যমাণ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর।
উল্লেখ্য, ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মকর্তার সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করলে বা বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করলে তাকে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে আইনে।