
মিত্র থেকে শত্রু হওয়া পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে মধ্যে সাম্প্রতিক সশস্ত্র সংঘর্ষে বহু সেনা ও সন্ত্রাসী সদস্যদের হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এক্ষেত্রে পাকিস্তান অভিযোগ করেছে যে সন্ত্রাসী সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) কে নিজ দেশে আশ্রয় দিয়েছে আফগানিস্তান সরকার। এক্ষেত্রে ভারত এ সংগঠনটিকে অর্থ দিয়ে সহযোগীতা করছে। তবে এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে ভারত ও আফগানিস্তান।
সাম্প্রতিক এ যুদ্ধের মূলহোতা হিসেবে দেখা হচ্ছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) প্রধান নূর ওয়ালি মেহসুদকে। ইসলামাবাদ দাবি করছে, তিনি পাকিস্তানের ভেতরে প্রায় প্রতিদিনের হামলার নির্দেশ দিচ্ছেন।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও পাকিস্তান অভিযোগ করছে মেহসুদ ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা এখনো আফগানিস্তানে আশ্রয় নিচ্ছেন।
এর আগে গত সপ্তাহে কাবুলে একটি বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। মেহসুদকে বহনকারী বলে ধারণা করা একটি সাঁজোয়া গাড়িকে লক্ষ্য হামলা চালানো হয়। তবে পাকিস্তান সরকার এখনো হামলার দায় স্বীকার করেনি। এটি ২০২২ সালে আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি হত্যার পর কাবুলে পাকিস্তানের প্রথম বিমান হামলা।
জানা গেছে, নূর ওয়ালি মেহসুদ ২০১৮ সালে টিটিপির নেতৃত্বে আসেন। এর আগে এ সংগঠনের তিনজন নেতা যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার পর তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পাকিস্তানি সেনা অভিযানে গোষ্ঠীটি তখন আফগানিস্তানে পিছু হটেছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, কূটনৈতিক দক্ষতার মাধ্যমে মেহসুদ গোষ্ঠীকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন, নতুন কৌশল নিয়েছেন এবং বিভক্ত গোষ্ঠীগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন।
২০২১ সালে আফগান তালেবানের ক্ষমতায় ফেরার পর টিটিপি আরও স্বাধীনভাবে চলাচল ও অস্ত্র সংগ্রহের সুযোগ পেয়েছে। যার ফলে পাকিস্তানে বিশেষত আফগান সীমান্তঘেঁষা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে।
মেহসুদ নিজেকে পশতুন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থাপন করছেন এবং আফগান তালেবানের মতো একটি শাসনব্যবস্থা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রতিষ্ঠা করতে চান।