October 18, 2025
image_232710_1760727600

হিন্দু সম্প্রদায়কে নিজেদের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে হিন্দুধর্মীয় নেতারা বলেছেন, এ দেশে সাড়ে তিন কোটি হিন্দু জনগোষ্ঠীকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। ৭ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে ১ শতাংশই যথেষ্ট ন্যায্যতার কথা বলার জন্য। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে নিজেদের কথা বলতে হবে। সরকারে যে-ই থাকুক, নিজেদের অধিকারের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে শারদীয় দুর্গোৎসব-পরবর্তী বিজয়া সম্মিলন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নেতারা এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, সাভার সেনানিবাসের সিএমপি সেন্টার অ্যান্ড স্কুলের কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈনুদ্দীন শামীম, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আবু সায়েম, বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শান্টু বড়ুয়া প্রমুখ।

বিজন কান্তি সরকার বলেন, ‘আমাদের হিন্দুদের বিষয় নিয়ে যারা বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেছেন, সংগঠিত করেছেন; তাদের আমন্ত্রণ জানালে খুশি হতাম। আজ (শুক্রবার) জুলাই সনদ স্বাক্ষর হচ্ছে, তবুও আমি এখানে এলাম। কারণ, ওখানে হাজারের মধ্যে একজন হতাম আর এখানে আমি কথা বলতে পারছি। এবার পূজা যেন ভালোভাবে সম্পন্ন হয়, সেজন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শুরু থেকেই বিষয়টি লক্ষ রেখেছেন। জামায়াতে ইসলামীসহ অন্য রাজনৈতিক দলও লক্ষ রেখেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের এই একটা বিশেষ পরিবেশে অনেক কিছু আমরা করতে পারছি না। আমাদের কেন জানি বলতে ইচ্ছে করে, সরকারের অনেক কর্মকাণ্ডে হিন্দু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ কমে যাচ্ছে। সরকারের সঙ্গে আমাদের সবার কথা বলা দরকার। গত ১৫ থেকে ১৬ বছরে গণতন্ত্র বিপন্ন হয়েছে। গণতন্ত্র না থাকলে কোনো কিছুই ঠিকভাবে হয় না।’

ড. তাপস চন্দ্র পাল বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা সম্পন্ন করেছি। আজকের এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে পুরস্কার দিয়ে সেরা আয়োজকদের আমরা স্বীকৃতি জানাচ্ছি।’

সভাপতির বক্তব্যে জয়ন্ত কুমার দেব বলেন, ‘মা দুর্গা আবার কৈলাসে ফিরে গেছেন। তবে মনের ভেতর মায়ের যে জাগ্রত অবস্থান, সে অবস্থান যদি আমরা জাগ্রত রাখি, তাহলে বাংলাদেশের সাড়ে ৩ কোটি সনাতন ধর্মাবলম্বীর ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করার শক্তি কারও নেই। ৫ আগস্টের পর আমরা বাংলাদেশের আটটি বিভাগে সম্মেলন করেছিলাম। সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ দিতে চাই। সেনাবাহিনী বলেছিল, সম্মেলন করেন, আমরা করেছিলাম। সেনাবাহিনী সর্বদা আমাদের পাশে রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কিন্তু এ দেশের ভূমিপুত্র, এটা মনে রাখতে হবে। আমরা এ দেশের জন্ম-জন্মান্তরের পূর্বপুরুষের বংশধর। অনেকে অনেক কিছু ভাবেন, অনেক কিছু চিন্তা করেন। আমরা বলতে চাই, যত পারসেন্টই হোক, ওয়ান পার্সেন্ট ইজ এনাফ টু ফাইট এগিনেস্ট দ্য এভিল ফোর্স।’

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে এবারের দুর্গাপূজায় সেরা আয়োজনের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। প্রতিমা নির্মাণ ও স্মরণিকায় প্রথম হয়েছে গুলশান-বনানী সর্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন; সাজসজ্জায় প্রথম হয়েছে উত্তরা সর্বজনীন পূজা কমিটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *