
আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী বলেছেন, রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী কোর্টে দাঁড়িয়ে ‘শাপলা চত্বরে কোনো গণহত্যা হয়নি’ বলে যে মিথ্যাচার করার দুঃসাহস দেখিয়েছেন, তাতে আমরা হতবাক ও ক্ষুব্ধ। আমরা তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।
বুধবার (২২ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নৃশংস হামলার ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। সেই ভয়াবহ ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মোহাম্মাদ আমির হোসেনের দেওয়া বক্তব্য— “শাপলা চত্বরে গণহত্যা হয়নি, হয়ে থাকলেও শেখ হাসিনা জানতেন না”—আমরা গভীর ক্ষোভ ও তীব্র প্রতিবাদসহ তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি।
মাওলানা রাব্বানী বলেন, আমরা মনে করি এই বক্তব্য শুধু শহীদদের আত্মাকে অপমানই নয়, বরং বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে নির্মম প্রহসন। শাপলা চত্বরে শত শত আলেম, ছাত্র ও নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিল—যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, মানবাধিকার সংস্থা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যে বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সেদিন ৬১ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান, এবং অনেকের এখনো কোনো খোঁজ মেলেনি। এই রক্তাক্ত সত্য অস্বীকার করা মানে ইতিহাসকে বিকৃত করা এবং শহীদদের আত্মত্যাগকে অপমান করা।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, শাপলা চত্বরের হত্যাযজ্ঞ ছিল একটি পরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। এই ঘটনায় নিহতদের জন্য আজও কোনো স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার হয়নি। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর দায়িত্ব ইতিহাস ধামাচাপা দেওয়া নয়; বরং সত্য উদঘাটনে সহায়তা করা।
‘আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডের ইনসাফনির্ভর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বিচারিক তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। শাপলা চত্বরের নিহতদের শহীদ ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর ধৃষ্টটাপূর্ণ এই বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।’