October 25, 2025
টমেটো

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার সীমান্ত বন্ধ থাকায় দুই দেশেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু-হু করে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে, পাকিস্তানে টমেটোর দাম পাঁচগুণ পর্যন্ত বেড়ে কেজিপ্রতি ৬০০ রুপি হয়েছ। চলতি মাসে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরুর পর থেকেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।

অক্টোবরের ১১ তারিখ থেকে দুই দেশের মধ্যে স্থলযুদ্ধ ও পাকিস্তানের বিমান হামলার পর সীমান্তপথগুলো সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে সংঘর্ষে দুই পক্ষেরই ডজনখানেক মানুষের মৃত্যু হয়, যা ২০২১ সালে তালেবান কাবুল দখলের পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কাবুলে পাক-আফগান চেম্বার অব কমার্সের প্রধান খান জান আলোকোজাই বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রয়টার্সকে জানান, সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সব ধরনের বাণিজ্য ও পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিদিন দুই দেশই প্রায় ১০ লাখ ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। আমাদের বার্ষিক ২৩০ কোটি ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের মূল অংশই তাজা ফল, সবজি, খনিজ, ওষুধ, গম, চাল, চিনি, মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্য।

সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে টমেটোর, যা রান্নায় সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত সবজি। দাম বেড়ে এখন কেজিপ্রতি প্রায় ৬০০ রুপিতে পৌঁছেছে, যা এক মাস আগের তুলনায় ৪০০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি। আফগানিস্তান থেকে আমদানি হওয়া আপেলের দামও বেড়েছে ব্যাপকভাবে।

আলোকোজাই জানান, আমাদের প্রতিদিন প্রায় ৫০০ কনটেইনার সবজি রপ্তানির জন্য প্রস্তুত থাকে, কিন্তু সীমান্ত বন্ধ থাকায় সবই নষ্ট হয়ে গেছে।

উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধান সীমান্ত টোরখামে অবস্থানরত এক পাকিস্তানি কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, বর্তমানে দুই পাশেই প্রায় ৫ হাজার কনটেইনার পণ্য আটকে আছে।

তিনি আরও জানান, বাজারে এরই মধ্যে টমেটো, আপেল ও আঙুরের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সংঘাতের সূত্রপাত ঘটে যখন ইসলামাবাদ দাবি করে যে, আফগান ভূখণ্ড থেকে পরিচালিত সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে কাবুল সরকার যাতে ব্যবস্থা নেয়। পাকিস্তানের অভিযোগ, তালেবান সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে, তবে তালেবান প্রশাসন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

তবে গত সপ্তাহ শেষে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়, যা এখনো বহাল আছে। যদিও সীমান্তপথ দিয়ে পণ্যবাণিজ্য এখনো চালু হয়নি। পরবর্তী পর্যায়ের শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে ২৫ অক্টোবর, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *