পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিতর্কিত সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন বলে দাবি করেছেন সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা জন কিরিয়াকু। তার দাবি, এর বিনিময়ে লাখ লাখ ডলার দিয়েছিল ওয়াশিংনটন।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জন কিরিয়াকু জানান, চলতি শতাব্দীর প্রথম দশকে যখন পাকিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন জেনারেল পারভেজ মোশাররফ, তখন পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করতো যুক্তরাষ্ট্র। বিপুল অর্থের বিনিময়ে ওয়াশিংটনকে এই ক্ষমতা দিয়ে রেখেছিলেন তিনি।
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে ক্ষমতা দখল করেন জেনারেল মুশাররফ। এরপর প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২০২৩ সালে দুবাইয়ে মারা যান তিনি।
পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নানা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের ইতিহাস বেশ পুরনো। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক এবং গণমাধ্যমগুলো বলছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট মোশাররফের শাসনামলে দেশটির ভেতরে-বাইরে মার্কিন প্রভাব ছিল সবচেয়ে বেশি।
এবার এই ইস্যুতে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন জন কিরিয়াকু। তিনি জানিয়েছেন, ২০০১ সালের পর পাকিস্তানে মার্কিন প্রভাব এতটাই বেড়ে যায় যে, তা ছিল অনেকটাই অর্থের বিনিময়ে পারভেজ মোশাররফকে কিনে নেয়ার মতো।
তিনি বলেন, ‘আমি যখন দায়িত্বে ছিলাম তখন বিপুল ডলার সহায়তা দেয়া হয়েছিল। তবে এই অর্থ কোনখাতে ব্যয় হতো কেউ জানতো না। পারভেজ মোশাররফকে কার্যত যুক্তরাষ্ট্র কিনে নিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মোশাররফের সাথে নিয়মিত দেখা করতাম। প্রচুর অর্থ দেয়া হতো তাকে। তার ভয় ছিলো এসব অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ জঙ্গিদের কাছে চলে যেতে পারে। সেই আশঙ্কায় পরমাণু অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রেকে দিয়ে রাখেন তিনি।’
কর্মজীবনে সিআইএর সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযান বিষয়ক প্রধান ছিলেন কিরিয়াকু। নারী সেজে আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে পালিয়ে যান আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন- সাক্ষাৎকারে এমন দাবিও করেছেন তিনি।
কিরিয়াকু বলেন, মার্কিন সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের এক কমান্ডারের অনুবাদক ছিলেন একজন আল-কায়দা গুপ্তচর। মার্কিন সেনাবাহিনীতে কাজের আড়ালে গোপনে জঙ্গি গোষ্ঠীটিকে তথ্য পাচার করতো সে। এই অনুবাদকের সাহায়তা নিয়েই বোরকা পরে আফগানিস্তানের তোরাবোরা পাহাড় থেকে পালিয়ে পাকিস্তানে যান লাদেন।
