October 28, 2025
68ff3ac3145f4

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলির দল লা লিবারতাদ আভাঞ্জা দেশটির সংসদ নির্বাচনে চমকপ্রদ সাফল্য অর্জন করেছে। প্রাথমিক ফলাফল এমনটিই ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই জয় মাইলির অর্থনৈতিক সংস্কার ও কৃচ্ছ্রসাধনমূলক পদক্ষেপগুলোকে আরও গতিশীল করবে বলে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন।

স্থানীয় সময় ২৬ অক্টোবর রবিবারের ভোটে মাইলির দল পেয়েছে ৪০.৮৪ শতাংশ ভোট, যেখানে বিরোধী পেরোনিস্ট জোট পেয়েছে ৩১.৬৪ শতাংশ ভোট। ৯০ শতাংশের বেশি ভোট গণনা শেষে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়। খবর আল জাজিরার।

নির্বাচনে দেশের নিম্নকক্ষের (চেম্বার অব ডেপুটিজ) ১২৭টি আসন এবং উচ্চকক্ষের (সিনেট) ২৪টি আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। মাইলির দল এখন নিম্নকক্ষে ৩৭ থেকে বেড়ে ১০১টি আসন এবং সিনেটে ৬ থেকে বেড়ে ২০টি আসন পেয়েছে।

বুয়েন্স আইরেস প্রদেশে (যা ঐতিহ্যগতভাবে পেরোনিস্টদের ঘাঁটি) মাইলির দলের অপ্রত্যাশিত ভালো ফলাফল রাজনৈতিকভাবে এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।

বিজয়োৎসবে মাইলি বলেন, ‘আর্জেন্টাইন জনগণ অবক্ষয়ের যুগ পেছনে ফেলে অগ্রগতির পথে পা রেখেছে। স্বাধীনতার আদর্শে বিশ্বাস রাখার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।’

এই জয়ের ফলে মাইলি এখন কংগ্রেসে তার ভেটো ক্ষমতা বজায় রাখতে এবং শ্রম ও কর সংস্কারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এগিয়ে নিতে সক্ষম হবেন।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মাইলিকে সমর্থন জানিয়ে ৪০ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে ২০ বিলিয়ন ডলারের মুদ্রা বিনিময় চুক্তি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, আর বাকি অংশটি বিনিয়োগ সুবিধা হিসেবে প্রস্তাবিত।

তবে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘যদি মাইলি সফল না হন, তাহলে আমরা সময় নষ্ট করব না।’

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের প্রকাশ্য সমর্থন ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সহায়তা এই নির্বাচনে অনেক ভোটারকে প্রভাবিত করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, অর্থনৈতিক কষ্ট ও কঠোর মিতব্যয়ী নীতির মধ্যেও জনগণ মাইলির নীতিকে সমর্থন দিয়েছে। কারণ তারা আশঙ্কা করছে—পুরনো পেরোনিস্ট সরকারে ফিরে গেলে দেশ আবারও অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক গুস্তাভো করদোভা বলেন, ‘এটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত ফল। জনগণ হয়তো সরকারকে আরেকটি সুযোগ দিতে চায়। তবে এই জয় প্রশ্নাতীত ও নিরঙ্কুশ।’

তবে, মাইলির সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। তার কঠোর নীতি মুদ্রাস্ফীতি ২৮৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩২ শতাংশে নামালেও জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। বিদ্যুৎ ও গণপরিবহনের ভর্তুকি তুলে দেওয়ায় সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছে, আর বেকারত্বের হার বেড়েছে আগের তুলনায়।

তবুও মাইলির দল এই নির্বাচনে যে সাফল্য পেয়েছে, তা আর্জেন্টিনার রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে বলে বিশ্লেষকদের মত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *