November 3, 2025
তাহের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, একটি মহল বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে দেশে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। আমরা এ পরিস্থিতির অবসান চাই। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হোক, তা আমরা অবশ্যই চাই। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরের মধ্যেই আমরা জুলাই সনদের আদেশের ওপর গণভোট চাই। দেশবাসী সবাই জানেন যে, গণভোটের ব্যাপারে সবাই একমত। তবে একটি দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট চায়— যা সম্পূর্ণ অবাস্তব। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নভেম্বরের মধ্যেই আমরা গণভোট চাই।

রবিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকার মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. তাহের বক্তব্য রাখছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে। তাদের এ বক্তব্যের জবাবে আমি জানাতে চাই— ১৯৯১ সালে যদি জামায়াত নিষিদ্ধ থাকতো, তাহলে কি জামায়াতের সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারতো? সেদিন যদি জামায়াত তাদের সমর্থন দিয়ে ক্ষমতায় না বসাতো, তাহলে বিএনপি কি বর্তমান পর্যায় আসতে পারতো? জবাব হলো অবশ্যই না। বিএনপি এখন পতিত স্বৈরাচারীদের মতোই জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে একই ধরনের একই ভাষায় হাস্যকর বক্তব্য দিয়ে অকৃতজ্ঞতার প্রমাণ দিচ্ছে। তারা এখন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। দেশে বর্তমান যে সংকট চলছে, তা বিএনপিই সৃষ্টি করেছে। জামায়াত কখনও ধোঁকা, প্রতারণা ও মোনাফিকির রাজনীতি করে না। বিএনপিই বরং ধোঁকা, প্রতারণা ও অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিচ্ছে।

এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দিন, জনাব মোবারক হোসাইন ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি এড. মতিউর রহমান আকন্দ।

ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের আরও বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্যের পক্ষে। সবাই মিলে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আলোচনার টেবিলে বসে সবাই সমস্যার একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তিনি বিএনপির নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের জনগণ সব সংকটের সমাধান চায়। তারা জাতীয় ঐক্য চায়। জাতীয় ঐক্যই বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ।

ডা. তাহের বলেন, কোনও কোনও মহল বলে যে, গণভোটে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। তাদের জবাবে আমি বলতে চাই, জাতীয় সংকট থেকে উত্তরণের জন্য গণভোটে যে টাকা খরচ হবে, জাতীয় প্রয়োজনে এটা কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদীরা দেশের যে টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তা দিয়ে এক হাজারটি গণভোট করা সম্ভব।

তিনি বলেন, বিএনপি প্রথম থেকেই সংস্কারের ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করে আসছে। তারা নিজেদের সংস্কারের পিতা দাবি করছিল। কিন্তু বাস্তবে সব সময়ই সংস্কারের বিরোধিতা করছে। দুনিয়ার কোনও দেশেই নোট অব ডিসেন্টের ওপর গণভোট হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূস সরকার জনগণের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় বসেছে। তার সততা, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও যোগ্যতা নিয়ে কারও কোনও প্রশ্ন নেই। কিন্তু বিএনপি বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনও মহলের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *