বিএনপির ভেতরে ফ্যাসিস্ট হওয়ার একটা খায়েশ রয়েছে, যে কারণে তারা সংস্কারের পথে বাধা দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ আকাশ থেকে পড়ে না বরং নিজ মাটি থেকে, শাসন থেকেই গজায়। আর গজায় তখন যখন এক ব্যক্তির হাতে অসম ক্ষমতা থাকে। ২ নভেম্বর (রবিবার) বিকেলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের মাল্টিপারপাস হলে ‘২৮ অক্টোবর থেকে ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদের কালো থাবা ও আগামীর বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির কড়া সমালোচনা করে ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, তারা প্রথমে ৩১টি দল নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে এক হয়ে সংস্কারের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হলেও পরে সে পথ থেকে সরে গেছে। রিফর্মে ছিল প্রধানমন্ত্রী এবং দলের প্রধান একজন হতে পারবে। কোনো ব্যক্তি একাধারে তার লাইফে ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। এগুলো যদি অ্যামেন্ডমেন্ট হয়, তাহলে স্বৈরাচারী চরিত্র এবং স্বৈরাচার হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার সুযোগটা থাকে না। তো এটার বিরোধিতা করা মানে কি? উনারা আবারো স্বৈরাচার হওয়ার একটা চিন্তাভাবনার মধ্যে আছে।
ডা. তাহের প্রধান উপদেষ্টাকে জনগণের কল্যাণের স্বার্থে কারও চাপে মাথা নত না করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কারো চাপে যদি আপনি হেলে পড়েন, মহাবিপদ। একদিক থেকে চাপ দিলে এদিকে যাবেন। আরেকদিকে যদি চাপটা একটু জোরে হয় তাহলে তো আবার আরেক দিকে যাবেন। আমরা জানি আপনি সাহসী, আপনি কোনো জায়গায় নতি স্বীকার করেন না, ভারতের মতো বিশাল রাষ্ট্রকে আপনি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন আলহামদুলিল্লাহ।
জামায়াতের এই নেতা সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, সংস্কার বাংলাদেশের মানুষের জন্যে, গণতন্ত্রের জন্যে, সুশাসনের জন্যে, ডেভেলপমেন্টের জন্যে, ডেমোক্রেসির জন্যে এটা অপরিহার্য। এখানে আমরা কোনো আপস মানি না।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে ‘হিরো’ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদ তাহের বলেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরে সংস্কার কার্যকর হলেই জাতি তাকে স্মরণ করবে।
তিনি সরাসরি মন্তব্য করেন, সংস্কার হয় না ডক্টর ইউনূস জিরো, সংস্কার হবে ডক্টর ইউনূস হিরো। তিনি যদি সংস্কার সঠিকভাবে করে দিতে পারেন, তবেই তিনি একজন ব্যতিক্রমধর্মী শাসক হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে নিজের নাম প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন।
তবে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ কোনো রাজনৈতিক দলকে খুশি করা নয়, বরং জাতিকে খুশি করা। ডা. তাহের এ সময় ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে বলেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আপনি ১৩ মাস ধরে একটা শাসন ক্ষমতায় আছেন। সংস্কারটা যদি ঠিকভাবে করে দিতে পারেন, তাহলেই নোবেলজয়ী একজন ব্যতিক্রমধর্মী শাসক হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে আপনার নাম থাকবে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম। প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আমির মো. নুরুল ইসলাম বুলবুল।
