চলতি বছরে হেনলি পাসপোর্ট সূচকে ভারতের অবস্থান আরও নিচে নেমেছে। বিশ্বের ১৯৯টি দেশের মধ্যে ভারত এখন ৮৫তম স্থানে। অথচ দেশটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের পাসপোর্টের দুর্বলতার পেছনে রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
১। কূটনৈতিক সম্পর্ক ও ভ্রমণ চুক্তির সীমাবদ্ধতা
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের জন্য নতুন নতুন ভিসা চুক্তি করছে। ফলে তাদের নাগরিকরা বেশি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু ভারত সেই গতিতে কূটনৈতিক চুক্তি বাড়াতে পারেনি।
২। অভিবাসন ও ভিসা অপব্যবহার
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত আচল মালহোত্রা বিবিসিকে বলেন, ‘অনেক দেশ এখন অভিবাসীদের বিষয়ে বেশি সতর্ক। ভারতে অনেক মানুষ বিদেশে গিয়ে থেকে যায় বা ভিসা সময় পার করে দেয়, যা ভারতের ভাবমূর্তিতে প্রভাব ফেলে।’ ফলে অনেক দেশ ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা দিতে সতর্ক হয়ে পড়ছে।
৩। রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ঝুঁকি
রিপোর্টে বলা হয়, একটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি তার পাসপোর্টের শক্তিতে প্রভাব ফেলে। ভারতের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা, ধর্মীয় উত্তেজনা ও অভিবাসন–সংক্রান্ত নিরাপত্তা ইস্যুগুলো অনেক দেশের চোখে ভারতকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল’ হিসেবে তুলে ধরেছে।
৪। পাসপোর্ট জালিয়াতি ও প্রশাসনিক জটিলতা
শুধু ২০২৪ সালেই দিল্লি পুলিশ ২০৩ জনকে পাসপোর্ট ও ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি ভারতের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া ধীরগতি ও জটিল হওয়ায় বিদেশি দেশগুলো ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা দিতে অনীহা প্রকাশ করছে।
৫। প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ধীর গতি
ভারত সম্প্রতি ই-পাসপোর্ট চালু করেছে, যেখানে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষিত থাকে। তবে এই প্রকল্প এখনো সীমিত পর্যায়ে রয়েছে। আচল মালহোত্রা বলেন, ‘ই-পাসপোর্ট প্রযুক্তি ভারতের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে, কিন্তু এটি এখনো পর্যাপ্তভাবে বিস্তৃত হয়নি।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পাঁচটি কারণ ভারতের পাসপোর্টের শক্তি কমিয়ে দিচ্ছে। যার ফলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার মধ্যে ভারত পিছিয়ে পড়ছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান এখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টধারী দেশ। অন্যদিকে ভারত রয়েছে আফ্রিকার ছোট দেশ মৌরিতানিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে ৮৫তম স্থানে।
