November 5, 2025
image_238090_1762371443

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক বৃদ্ধকে লাঠি হাতে শাসানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছেভিডিওতে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) কার্যনির্বাহী সদস্য সর্ব মিত্র চাকমা লাঠি নিয়ে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছেন।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে জন্ম নেয় নানা আলোচনা-সমালোচনার। সেই ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সর্ব মিত্র চাকমা। বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে এ স্ট্যাটাস দেন তিনি।

স্ট্যাটাসে সর্ব মিত্র চাকমা বলেন, ‘গতকালের বিতর্কিত ভিডিও নিয়ে যত ধরনের ঘোলাটে বিষয়, শেষবারের মতো ক্লিয়ার করা জরুরি বলে মনে করি। বৃদ্ধ লোকের সঙ্গে এমন আচরণ কেন?- বৃদ্ধ লোকটিকে এ পর্যন্ত পাঁচ থেকে ছয় বার তুলে দেওয়া হয়েছিল। ইনজেকশন সিরিঞ্জ দিয়ে মাদক গ্রহণ, গাঁজা ইত্যাদি মাদক সেবনের অভিযোগ থাকার পরও ক্যাম্পাস ছাড়ার সুযোগ দিয়েছি গত ছয় দিন। তাও, ক্যাম্পাস না ছাড়াই কঠোরতার আশ্রয় নিতে হয়েছে। উল্লেখ্য, মাদকসহ তার ভিডিও আছে প্রমাণসহ। আমার তাকে প্রতিদিন সরাতে হচ্ছে, এ জন্য আমার অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছিল ভিডিওতে আমার কথায়, ‘লোকটা প্রতিদিন বলে- আজকেই যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘জায়গাটা কি ক্যাম্পাসের বাইরে?- যিনি পোস্ট করেছেন তিনি উল্লেখ করেছেন বার্ন ইন্সটিটিউটের কথা। বোধ হয় ইচ্ছাকৃতভাবেই যাতে মানুষ মনে করে ক্যাম্পাসের বাইরে। কিন্তু, ফুটপাতটা মূলত অমর একুশে হলের শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত ফুটপাত এবং ক্যাম্পাসের অংশেই পড়ে। এ ফুটপাতে ভবঘুরে ও মাদকসেবী দিয়ে ভরে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের এ অভিযোগ দীর্ঘদিনের।’

বৃদ্ধ লোকটিকে কি প্রহার করা হয়েছে? – বৃদ্ধ লোকটির ব্যাগে মূলত মাদক এবং বিভিন্ন উপাদান ছিল এবং স্ট্র‍্যাচার তার হাতে ছিল যেটা তার লাগেই না। কিন্তু, ভিক্ষাবৃত্তির জন্য প্রতারণার উদ্দেশে লোকটা স্ট্র‍্যাচার ব্যবহার করে। এর আগেও তাকে সতর্ক করা হয়েছিল, যাতে স্ট্র‍্যাচার ব্যবহার না করে। লোকটিকে কোনোভাবেই প্রহার করা হয়নি। প্রক্টরিয়াল বডির এক সদস্য মূলত ব্যাগটা তার হাত থেকে ছাড়ানোর উদ্দেশে ব্যাগে বাড়ি দেয় লাঠি দিয়ে। ক্যাম্পাসের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে এটা প্রক্টরিয়াল বডির দায়িত্বের আওতায় পড়ে। কারণ, প্রক্টরিয়াল বডি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত।’

তিনি বলেন, ডাকসু বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ অধ্যাদেশ দ্বারা স্বীকৃত একটি প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি আনুষ্ঠানিক অংশ। ডাকসু বডির একজন সদস্য হিসেবে আমার অবশ্যই এখতিয়ার আছে প্রক্টরিয়াল বডি কীভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেটা পর্যবেক্ষণ করা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এবং তাদের অপারেশন পরিচালনায় সহায়তা করা।

পুলিশের হাতে না দেওয়ার প্রসঙ্গে সর্বমিত্র বলেন, তথাকথিত ‘প্রহারের’ কারণে যে মানবিকতার কথা বলছেন, সেই একই মানবিকতার কারণে গত ছয়দিন ধরে লোকটাকে উঠাচ্ছি আইনের হাতে তুলে না দিয়েবৃদ্ধ লোকটির অসহায়ত্ব আমার কাছে গত ছদিন মূল বিষয় ছিল, যা দূর্ভাগ্যবশত আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে

স্ট্যাটাসের শেষে তিনি বলেন, মূলত কোনো পথচারী এ ভিডিও করেনি। যারা সেদিন এ ভিডিও করেছে তারা খুব সূক্ষ্মভাবে লুকিয়ে করেছে এবং তারা পুরো অভিযান জুড়ে বাইকে দূর থেকে ভিডিও ধারণ করে পরিকল্পিতভাবে এবং তারা প্রত্যেকে রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *