November 7, 2025
image_238289_1762431649

দেহের সুস্থতার অন্যতম শর্ত হলো কিডনি ভালো থাকাকিন্তু অজান্তেই আমরা এমন অনেক ভুল করি, যার প্রভাব সরাসরি পড়ে এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ওপরবিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিডনির বড় শত্রু হলো পানির ঘাটতিপর্যাপ্ত পানি না খাওয়ার অভ্যাসে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়, যার ফলাফল হতে পারে গেঁটে বাত, কিডনিতে পাথর কিংবা হার্টের জটিলতা পর্যন্ত। তাই শরীর সুস্থ রাখতে জানতে হবে, দিনে ঠিক কতটা পানি খাওয়া উচিত, আর কেন তা এত জরুরি।

রক্তে ইউরিক অ্যাসিড থাকা অস্বাভাবিক নয়। আবার, এমন কিছু খাবারও রয়েছে যেগুলো খেলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। সাধারণত এটি রক্তে মিশে কিডনির মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তবে মাঝে মাঝে এই অ্যাসিডের পরিমাণ অতিরিক্ত হয়ে গেলেই সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলা হয় ‘হাইপারইউরেসেমিয়া’।

চিকিৎসকরা সতর্ক করছেন, দীর্ঘদিন ধরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত থাকলে তা থেকে গেঁটে বাত, কিডনিতে স্টোন, এমনকি হার্টের জটিলতা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।

সমাধান কী?

চিকিৎসকদের মতে, সবচেয়ে কার্যকরী ও প্রাকৃতিক উপায় হলো শরীরকে আর্দ্র রাখা। অর্থাৎ পর্যাপ্ত পানি পান করা। শরীরে যদি ফ্লুইডের মাত্রা ঠিক থাকে, রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে না এবং কিডনির কার্যক্ষমতাও ভালো থাকে।

তারা বলেন, পানি হলো শরীরের প্রাকৃতিক ‘ডিটক্সিফায়ার’। এটি রক্তে ইউরিক অ্যাসিডকে পাতলা করে দেয়, ফলে অতিরিক্ত অ্যাসিড সহজেই কিডনির ছাঁকনি দিয়ে বেরিয়ে যায়। কিন্তু শরীরে পানির ঘাটতি হলেই রক্তে অ্যাসিডের ঘনত্ব বেড়ে যায় এবং তা জোড়ায় জোড়ায় বা কিডনিতে জমে সমস্যা সৃষ্টি করে।

গবেষণায় যা বলা হয়েছে

চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর তথ্যমতে, যাদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি এবং গেঁটে বাতের সমস্যা রয়েছে, তাদের দিনে অন্তত ২০০০-৩০০০ মিলিলিটার (প্রায় ৮-১২ গ্লাস) পানি পান করা জরুরি। একইভাবে ‘দ্য জার্নাল অব নেফ্রোলজি’**-তেও বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত পানি পান করার অভ্যাস ইউরিক অ্যাসিডজনিত কিডনি রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনে।

দিনে কতটা পানি খাবেন?

চিকিৎসকদের মতে, পানির পরিমাণ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে গড়ে পুরুষদের দিনে অন্তত ৮-৯ গ্লাস, আর নারীদের ৭-৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত। তবে একসঙ্গে অনেকটা পানি না খেয়ে সারা দিনে অল্প অল্প করে সিপ করে খাওয়াই সবচেয়ে কার্যকর।

দিনের শুরুতে এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ পানি খাওয়া দারুণ উপকারী। এর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিলে শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়া আরও কার্যকর হয় এবং দিনের শুরুটা হয় সতেজভাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *