রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবু হেনা রাজ্জাকী বলেছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া টিকিয়ে রাখতে হলে নির্বাচন ছাড়া বিকল্প নেই। আর যদি ব্যক্তি পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয় তখন কিছুই হয় না, আল্টিমেটলি দলগুলোকেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এই দলে কারা নির্বাচনে বেশি অনাগ্রহী বা বেশি আগ্রহী, এগুলো তাদের ভাষা থেকেই বোঝা যায়—দলের নাম করে বলার প্রয়োজন নেই। তাই এটাও তাদের ব্যাপার।
যদি আপনি দলীয়ভাবে চিন্তা করেন, তারা লড়াই করবে; আর যদি মনে করে দলবিহীন লোকদের বেশি সম্পৃক্ত করতে পারবে, আন্দোলন তাদের পক্ষে তত বেশি শক্তিশালী হবে।
সম্প্রতি এক বেসরকারি টেলিভিশনে টক শো অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আবু হেনা রাজ্জাকী বলেন, গত ৫৩ বছরে বাঁকা আঙ্গুল দেখিয়ে প্রক্রিয়াটি চলছে। আমি বাংলাদেশে এটিই দেখেছি।
এখানে যে দলবিহীন জনগণ আছে তাদের ভাষা কোনো রাজনৈতিক দল এখনো বুঝতে পারেনি কিংবা বুঝতে চাননি।
রাজ্জাকী বলেন, বাঁকা আঙ্গুল একটি বড় বিপথ। ১৯৯৬ সালে আঙ্গুল সোজা রেখে কোনো ফল হয়নি পরে আঙ্গুল বাঁকা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার রূপে অবস্থান বদলেছে। পরে ১/১১ ঘটেছে, যদি আঙ্গুল সোজা থাকতো ওটা আসত না।
এরপর ড. ইউনূস সাহেবের সময় জুলাই অভ্যুত্থানের আঙ্গুলটি সোজা ছিল না; তখন অনেক লোক মারা গিয়েছিল প্রায় ১৪০০ জন। আঙ্গুল সোজা করে কোনো বড় অর্জন করা যায় না। বাচ্চাও যদি জুতা চায়, নানান অজুহাত করা হয়; তারপর প্রকৃত প্রয়োজন হলে জুতা আসে—এখানেও তেমনই বর্ণনা আছে।
তিনি বলেন, বাঁকা আঙ্গুল রাজনৈতিক দলের জন্য ক্ষতিকর। জামায়াত যদি বাঁকা আঙ্গুলের কথা বলে, তা ক্ষতিকর কেন? যদি এই প্রক্রিয়া নির্বাচন অস্থির করে এবং নির্বাচন বাতিল হয়।
যদিও আমি বলছি না এটা বাতিল হবে তবে স্বাভাবিকভাবে বাঁকা আঙ্গুলের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে বিএনপির ওপর এর পড়বে? কারণ নির্বাচনে বিএনপির জয় সুনিশ্চিত।
আবু হেনা রাজ্জাকী বলেন, বাঁকা আঙ্গুলের যে রেজাল্টটি হচ্ছে, সেটা দেশ ও জনতার জন্য ভালো কিনা, সেটাও দেখতে হবে। যদি দেশের সাধারণ, দলবিহীন জনগণ মনে করে যে এটা রাষ্ট্র ও জনগণের মঙ্গলের জন্য ঠিক, তবে দলহীন লোকগুলো যোগ দিতে পারে; আর যদি দেখে যে বাঁকা আঙ্গুল কাজে আসে না এবং তাদের একটিরও প্রয়োজন নেই—তাহলে দলহীন লোকগুলো যোগ দেবে না। তবে এই বাঁকা আঙ্গুল প্রসঙ্গে সংঘর্ষের সম্ভাবনা মারাত্মকভাবে বাড়ছে। কোথায় এটি থামবে, সেটা সময়ই বলে দেবে।
