রেলপথে ৪৬ টি দুর্ঘটনায় নিহত ৩৯, আহত ০৭ জন। নৌ-পথে ১৪ টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৬, আহত ২৭ ও নিখোঁজ ১৫
বিদায়ী ফেব্রুয়ারী মাসে ৪৪৭ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৭ জন নিহত, ৭৬১ জন আহত হয়েছে। একই সময় রেলপথে ৪৬ টি দুর্ঘটনায় ৩৯ জন নিহত, ০৭ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ১৪ টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, ২৭ জন আহত এবং ১৫ জন নিখোঁজ হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫০৭ টি দুর্ঘটনায় ৫২২ জন নিহত এবং ৭৯৫ জন আহত হয়েছে। এ মাসে ১৫৪ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৫৯ জন নিহত, ৮২ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
আজ ০৭ মার্চ মঙ্গলবার সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৭২ জন চালক, ৯৩ জন পথচারী, ৩৪ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬২ জন শিক্ষার্থী, ১৪ জন শিক্ষক, ০৫ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৯৪ জন নারী, ৬৭ জন শিশু, ০১ জন সাংবাদিক, ০১ জন আইনজীবী ও ০১ জন প্রকৌশলী এবং ০৯ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। যার মধ্যে নিহত হয়েছে ০৩ জন পুলিশ সদস্য, ০২ সেনাবাহিনীর সদস্য, ১৩৩ জন চালক, ৮৬ জন পথচারী, ৫২ জন নারী, ৪৪ জন শিশু, ৫০ জন শিক্ষার্থী, ২৪ জন পরিবহন শ্রমিক, ১১ জন শিক্ষক, ০১ জন প্রকৌশলী, ০১ জন আইনজীবী ও ০৯ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এ সময়ে সংগঠিত দুর্ঘটনায় ৫৯৮টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ১৩.৭১ শতাংশ বাস, ২৭.০৯ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৭.১৯ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস, ৬.৩৫ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ২৫.৫৮ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১২.০৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৮.০২ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্
সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫৭.৭১ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৯.০১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৩.৮৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৮.০৫ শতাংশ বিবিধ কারনে, ০.২২ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না পেছিয়ে এবং ০.৮৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারী মাসে সংগঠিত দুর্ঘটনার ৩১.৯৯ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১.৭০ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৮.৯২ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪.২৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ২.২৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে, ০.৮৯ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি সংগঠিত হয়েছে ০৭ ফেব্রুয়ারী, এই দিনে ২৫ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছে।
সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ১৮ ফেব্রুয়ারী, এই দিনে ০৮ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ০৮ জন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ : ১। বেপরোয়া গতি। ২। বিপদজনক অভারটেকিং। ৩। ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল। ৪। যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা। ৫। চালকের অদক্ষতা ও বেপরোয়া মনোভাব। ৬। মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো। ৭। রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা। ৮। ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ট্রাফিক আইন অমান্য করা । ০৯। ছোট যানবাহনের ব্যাপক বৃদ্ধি। ১০। রাস্তার পাশে হাট-বাজার। ১১। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় নামানো। ১২। চালকের নিয়োগ ও কর্মঘন্টা সুনির্দিষ্ট না থাকা। ১৩। দেশব্যাপী নিরাপদ ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তে টুকটুকি-ইজিবাইক-ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা নির্ভর গণপরিবহন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়ার কারনে সড়কে দুর্ঘটনা ক্রমবর্ধমান।
সংবাদদাতা
মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী
মহাসচিব
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন