আব্দুস সালাম (জয়), ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের বারইখালী গ্রামে শনিবার রাতে দুর্বৃত্তদের হাতে পান বরজ কেটে দেওয়ার ঘটনায় ৩ কৃষক অসহায় হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় কৃষক আরাফাত শাহ, আলহাজ শাহ, এবং আয়াতুল্লাহ শাহের দুই বিঘা জমির পান বরজে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
কৃষকরা তাদের জমিতে পান চাষ করছিলেন এবং কয়েকটি জমি থেকে পান সংগ্রহ করেছেন। তবে, শনিবার রাতে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাদের পান বরজের সব গাছ কেটে ফেলে। ভোরে মাঠে এসে তারা দেখতে পান যে, সমস্ত গাছ কাটা হয়েছে এবং জমির অবস্থা বেহাল। এই ঘটনায় কৃষকদের প্রায় ৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে, যা তাদের জীবিকার জন্য ব্যাপক সংকট সৃষ্টি করেছে।
আয়াতুল্লাহ শাহ এই বিষয়ে বলেন, “আমরা জীবিকা নির্বাহের জন্য পান বরজের ওপর নির্ভর করি। এমন ঘটনার ফলে আমাদের পরিবার বড় ধরনের বিপদে পড়েছে। আমরা তো কারো সাথে শত্রুতা করিনি, তাহলে আমাদের এত বড় ক্ষতি কেন করা হলো? আল্লাহ’র কাছে বিচার দিলাম।” এভাবেই তিনি তাদের অসহায়ত্ব ও আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিন বলেন, “পান বরজ কেটে দেওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।” এটি স্থানীয় প্রশাসনের একটি আশ্বাস, কিন্তু কৃষকদের জন্য বাস্তবতা এখনও পরিবর্তিত হয়নি।
এ ঘটনার মাধ্যমে প্রকাশ পায় কৃষকদের নিরাপত্তার অভাব এবং তাদের জীবিকার ওপর দুর্বৃত্তদের হস্তক্ষেপের ভয়াবহতা। বিশেষ করে যখন তারা কৃষি কাজের মাধ্যমে নিজেদের ও পরিবারের মুখে ভাত তুলে ধরতে কঠোর পরিশ্রম করেন। এই ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দোষীদের আইনের আওতায় আনতে না পারলে ভবিষ্যতে কৃষকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। কৃষকদের সুরক্ষা ও তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সরকারিভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। কৃষি সেক্টরে নিরাপত্তা, প্রশিক্ষণ, ও সঠিক সহায়তা প্রদানে সরকারের দায়িত্ব অপরিহার্য।
ঝিনাইদহের বারইখালী গ্রামের কৃষকদের ওপর এ ধরনের হামলা একটি অমানবিক কর্মকাণ্ড। তাদের জীবিকা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো কৃষক এ ধরনের বিপদের মুখোমুখি না হন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন