আওয়ামী লীগকে মরা হাতির সঙ্গে তুলনা করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘এটা এখন মরা হাতি—এটাকে এখন যে ইচ্ছা, সে লাথি দিতে পারে। এটা আর ফিরে আসবে না।’
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে ‘ইকোনমিক রিফর্ম সামিট’-এর দ্বিতীয় দিনে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন। নাগরিক কোয়ালিশন, ব্রেইন, ভয়েস রিফর্ম, ইনোভিশন ও ফিনটেক সোসাইটি এই সামিটের আয়োজন করে।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘ইতিহাসকে যেন আর ক্ষমতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা না হয়। আওয়ামী লীগ এখন ডেড চ্যাপ্টার। এটা এখন মরা হাতি—এটাকে এখন যে ইচ্ছা, সে লাথি দিতে পারে। এটা আর ফিরে আসবে না। তবে আমাদের ঐক্য বজায় রাখতে হবে, না হলে ঝামেলা হতে পারে। আওয়ামী লীগ তো একটা ধর্ম।’
তিনি বলেন, আমরা যদি আবার বিভিন্ন বর্গে, সূত্রে ভাগ হয়ে যাই, তখন আমাদের জন্য কঠিন হবে। আওয়ামী লীগ বিভিন্ন নামে ফিরে আসতে পারে, এটা তাদের ধর্ম। কারণ তাদের একটা কেবলা আছে। একটা ধর্মে যা যা থাকে তার সব আসে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের জুলাইয়ের সংগ্রামের ইতিহাসকে লিপিবদ্ধ করতে হবে, যাতে করে এটাকে এলোমেলো করা না যায়। সঠিক দৃশ্যটা যেন সবার সামনে আসে। এখানে অনেক ধরণের মিরর থাকবে। আমি জুলাইকে যেভাবে দেখেছি। এখানে অনেকে আছেন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এক না। তারা তাদের মতো করে বর্ণনা করবে। এজন্য প্রত্যেকটা দৃষ্টিভঙ্গি উঠে আসা উচিত।
হাসনাত বলেন, ইতিহাসে ভালো-খারাপ বলে কিছু নাই। ইতিহাসের পরিমাণগত, উদ্দেশ্যগত এবং মূল্যায়ন সম্ভব না। এজন্য আমাদের প্রত্যেকের ইতিহাস লেখা উচিত। যাতে করে প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গি দেখে মানুষ বুঝতে পারে, কোনটা সঠিক, কোনটা ভুল। যার কাছে যেটা সঠিক মনে হবে, নায্য মনে হবে সেটা বাছাই করে যেন সঠিকটা অনুধাবন করতে পারে।
ইতিহাস যেন আর ক্ষমতা হিসেবে ব্যবহার করা না হয় উল্লেখ করে এনসিপির এ নেতা বলেন, আমাদের ট্রাজেডি অনেকটা প্রোপাগান্ডা হয়ে যায়। কারণ যে সরকার সময় ক্ষমতায় থাকে তারা তাদের অবদানটাকে ফোকাস করে। আমরা চাই না, ক্ষমতার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সাব-হিস্ট্রিগুলো মূল ইতিহাস না হয়ে উঠে। ইতিহাস যেন নির্ভুল থাকে।
আমলাতন্ত্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ব্যুরোক্রেসিকে গতিশীল করতে হবে। তারা গতিশীল না হলে যে ক্ষোভ জমছে, তাতে বিস্ফোরণ হবেই। আমলাতন্ত্র ঠিক না করতে পারলে, যেই ক্ষমতায় আসুক, ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।’
