 
                চব্বিশের জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় নেবেন না বলে জানিয়েছেন ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান তিনি।
সাক্ষাৎকারে যখন হাসিনাকে জিজ্ঞেস করা হয়, নিহত বিক্ষোভকারীদের পরিবারের কাছে তিনি ক্ষমা চাইবেন কি না? জবাবে হাসিনা বলেন, ‘আমি আমাদের প্রতিটি সন্তান, ভাই, বোন ও বন্ধুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি। আমি তাদের প্রতি আমার সমবেদনা জানাতে থাকবো।’ তবে হাসিনা দৃঢ়ভাবে দাবি করেন, তিনি কখনো পুলিশকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেননি।
হাসিনা বলেন, তিনি কোনো হত্যাকাণ্ডের দায় ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। বরং তিনি ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে ‘একটি সহিংস বিদ্রোহ’ বলে আখ্যায়িত করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে হাসিনা বলেন, ‘একজন নেতা হিসেবে আমি সার্বিকভাবে দায় স্বীকার করি। কিন্তু এই অভিযোগ যে আমি গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলাম- এটি সম্পূর্ণ ভুল।’
হাসিনার দাবি, ‘অনির্বাচিত’ অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। ওই সময়ের ‘জুলাই গণহত্যা’র ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলমান। শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আদালতে হাজির হতে এরই মধ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানানো হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ ও সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
জুলাইয়ের অভ্যুত্থান, সহিংস দমন-পীড়ন ও আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুমসহ একাধিক অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা চলছে। এর আগে ট্রাইব্যুনাল গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর যেকোনো ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ প্রকাশ বা প্রচার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট

 
                             
                             
                       
                       
                            