দৌলতপুরে এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ
মোঃ মিজানুর রহমান, দৌলতপুর প্রতিনিধি।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার তালুকনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের এসএসসি'র ফরম পূরণে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক ময়নাল হকের বিরুদ্ধে। এছাড়া প্রতি ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে। কোচিং ফি বাবদ প্রতি মাসে ১২০০ টাকা জোরপূর্বক ভাবে আদায়ের পর ফরম পূরণ অনুমতি দেন ফরম পূরণ কমিটির শিক্ষকগন। এছাড়া আরো তথ্য নিয়ে জানা যায় উপজেলার সব কয়টি স্কুলেই অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণে বোর্ড কর্তৃক ফি নির্ধারণ করা হয়েছে বিজ্ঞান বিভাগে ২ হাজার ১৪০ টাকা ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে ২ হাজার ২০ টাকা করে নেওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন কৌশলে ৩ হাজার ৫০০-৪ হাজার টাকা ও কোচিং ফ্রি ১হাজার ২০০ থেকে এক হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ময়নাল হক ।
সরকারি বিধান অনুযায়ী ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বেতন নেয়ার কথা থাকলেও প্রত্যেক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন নেওয়া হয়েছে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত। কোচিং বাণিজ্যের ব্যাপারে সরকারের কঠোর হুঁশিয়ারি থাকা সত্ত্বেও বাধ্যতামূলক কোচিং করানোর নামে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ১হাজার ২০০ টাকা করে। এ ছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়ন ফি, কেন্দ্র ফি ও বিবিধ টাকার নামে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, কোচিং না করলেও বাধ্যতামূলক কোচিং এর টাকা জমা দিয়ে ফরম ফিলাপ করতে হয়েছে।
বিদ্যালয়টি থেকে এবছর এসএসসি এবং ভকেশনালসহ মোট ১১৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
এবিষয়ে শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন তার ফরম পূরণে ২৪০০ টাকা চেয়েছেন আর কোচিং ফি বাবদ ১২০০ টাকা চেয়েছেন । আগে কোচিং ফি পরিশোধ করতে হবে।তারপর ফরম পূরণের অনুমতি দিবেন স্যাররা । আমার পিতা একজন দিনমজুর আমি কিভাবে এত টাকা দিব ।আমি ফরম ফিলাপের টাকা গুছাতে পারছি না অতিরিক্ত কিভাবে ১২০০ টাকা আমার পিতা দিবে। আমি স্যারদের বলেছি আমি কোচিং করব না কিন্তু তারা শুনছেনা ।
আমার মেয়ে তালুকনগর স্কুলে থেকে এই বছর বিজ্ঞান শাখা হতে এসএসসি পরীক্ষা দিবে। আমার মেয়ের ফরম পূরণ করিয়েছি ৪ হাজার টাকা দিয়ে ।এর মধ্যে ১২শত টাকা কোচিং ফি কেটে রেখেছেন এবং আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত বেতন নিয়েছেন স্যাররা। কষ্ট করে গুছিয়ে দিয়েছি কিন্তু যারা গরীব তারা কিভাবে এত টাকা দিয়ে ফর্ম ফিলাপ করবে।
অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার ব্যাপারে বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ড.আলমগীর বিষয়টি অবগত নন বলে জানান সাংবাদিকদের কাছে।
এবিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক শওকত আলী বলেন ফরম পূরণের সিদ্ধান্ত ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকরা বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রতি মাসে কোচিং ফ্রি বাবদ টাকার ব্যাপারে কথা বললে তিনি বলেন ছেলে মেয়েরা এক সাবজেক্ট বিভিন্ন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ে এক হাজার টাকা দিয়ে অথচ আমরা ৫/৬ সাবজেক্ট পড়াবো ৩ মাস তাইলে আমাদের টাকা দিবে না কেন। গত বৎসর এসএসসি রেজাল্ট আমাদের স্কুলে খারাপ হওয়ার কারণে এই বছর যারা পরীক্ষায় ফেল করেছে তাদেরকে ফরম পূরণ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে তালুকনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ময়নাল হক জানান, বিদ্যালয়ে অনেক খরচ বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৮ হাজার টাকা এছাড়াও আরো অন্যান্য আনুষাঙ্গিক অনেক খরচ হয় আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা না নিলে এটা কিভাবে পূরণ করব।
সরকারি বিধির বাহিরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার ব্যাপারে দৌলতপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমদাদুর রহমান তালুকদার জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই ।তবে আইনের বাইরে কোন কিছু করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন