রোববার রাতে রাজধানীর মেট্রো রেলে এক কিশোরসহ দুজন যাত্রী ছাদে উঠায় সাময়িকভাবে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাত পৌনে ৯টার দিকে বাংলাদেশ সচিবালয় স্টেশনে ট্রেনের ছাদের ওপর দুইজন যাত্রী। তাদের দ্রুত নামিয়ে আনা হলেও এ কারণে পুরো মেট্রোরেল লাইন বন্ধ করে দিতে হয়। মেট্রোরেলে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে পুরো ট্রেন ও লাইন পরীক্ষা করতে হয়। এতে অসংখ্য যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েন।
বাংলাদেশে সচরাচর যেসব ট্রেন চলে, সেগুলো ডিজেলচালিত। বিপজ্জনক হলেও এসব ট্রেনের ছাদে চড়ে মানুষদের ভ্রমণ করতে দেখেছ নিশ্চয়ই। নিরাপদ নয়, জানার পরও অনেকেই এমনটা করেন। প্রতিবার ঈদের আগে কিংবা বিশ্ব ইজতেমার সময় ট্রেনের ছাদভর্তি মানুষের ছবি খবরের কাগজে দেখা যায়।
কিন্তু মেট্রোরেল একেবারেই ভিন্ন। কারণ—
১. মেট্রোরেল বিদ্যুৎ–চালিত। ছাদের ঠিক ওপরে থাকে অত্যন্ত শক্তিশালী বিদ্যুতের তার। এই তারই ট্রেনকে শক্তি দেয়। ট্রেনের ছাদ থেকে এই তার মাত্র কিছু সেন্টিমিটার দূরে থাকে। একটু কাছে গেলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এটা এমন শক্তি যে সেকেন্ডেই বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
২. মেট্রোরেল তুলনামূলক দ্রুত চলে। ছাদ পিচ্ছিল থাকে। একটু হোঁচট খেলেই পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৩. কেউ মেট্রোরেলের ছাদে উঠলে পুরো সিস্টেম বন্ধ করে দিতে হয়। এ পরিস্থিতিতে নিয়ম অনুযায়ী ট্রেন, লাইন, বিদ্যুৎব্যবস্থা—সব পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। এতে যাত্রীদের চলাচল থেমে যায়।
কাজেই ডিজেলচালিত ট্রেনের ছাদে ওঠা আর মেট্রোরেলের ছাদে ওঠার তুলনা করা যায় না। তেলচালিত ট্রেনের ছাদে বিদ্যুতের ঝুঁকি নেই; কিন্তু মেট্রোরেলের ছাদের ঠিক ওপরে থাকে উচ্চ ভোল্টেজের তার, যা ছোঁয়া মানেই মৃত্যুসম বিপদ।
তাই মনে রাখবে, মেট্রোরেলের ছাদ কোনো খেলার জায়গা নয়। একমুহূর্তের ভুল হয়ে যেতে পারে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। নিরাপদে থাকো, নিয়ম মেনে চলো—এটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।