জেফরি এপস্টেইনের এস্টেট থেকে প্রায় ১০০টি নতুন ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। ছবিগুলো ক্ষমতাধরদের সঙ্গে দোষী সাব্যস্ত এই যৌন অপরাধীর সম্পর্ক বিস্তারিত তুলে ধরেছে। ছবিতে যাদের নাম এসেছে, তাদের মধ্যে আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, বিলিয়নেয়ার বিল গেটস, সাবেক প্রিন্স অ্যান্ড্রু ও ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা স্টিভ ব্যানন।
শুক্রবার হাউস ওভারসাইট কমিটির তলব করে পাওয়া ৯৫ হাজারেরও বেশি ছবির অংশ এগুলো। প্রথম পর্বের ছবিতে এপস্টেইনকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে দেখা যায়। এই ব্যক্তিরা আগে কোনো অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ট্রাম্পকে শুক্রবার প্রকাশিত তিনটি ছবিতে দেখা গেছে। এর মধ্যে একটি ছবিতে তাঁকে এপস্টেইনের পাশে দাঁড়িয়ে মডেল ইনগ্রিড সেইনহাভের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। একটি ছবিতে লাল প্যাকেটে প্রেসিডেন্টের আঁকা ছবি দেখা যায়।
হোয়াইট হাউস এই ছবি প্রকাশকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘ডেমোক্র্যাট ধোঁকাবাজি’ বলেছে। ট্রাম্পের দাবি, এই বিষয়টি তাঁর অর্জনগুলো থেকে মনোযোগ সরানোর কৌশল।
শুক্রবার প্রকাশিত ফাইলগুলোতে এপস্টেইনের ব্যক্তিগত ছবিও আছে। বিল ক্লিনটনের একটি ছবিতে তাঁকে এপস্টেইন এবং গিসলাইন ম্যাক্সওয়েলের পাশে দেখা যায়। ম্যাক্সওয়েলকে ২০২১ সালে এপস্টেইনের যৌন নিপীড়নে সহায়তা করার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
এপস্টেইনের সঙ্গে কোনো অন্যায় কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ বিল ক্লিনটন অস্বীকার করেছেন।
অন্য একটি ছবি বিল গেটসের সঙ্গে প্রিন্স অ্যান্ড্রুকে দেখানোর জন্য মূল ছবি থেকে কাটা হয়েছিল। এপস্টেইনের সঙ্গে অতীত সম্পর্কের কারণে অ্যান্ড্রুকে ‘প্রিন্স’ উপাধি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি কোনো অন্যায় কাজের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা স্টিভ ব্যাননকেও কিছু ছবিতে এপস্টেইনের সঙ্গে কথা বলতে বা তার পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়। অন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন ল্যারি সামারস ও রিচার্ড ব্র্যানসন। ছবিগুলো কখন বা কোথায় তোলা হয়েছিল, তার কোনো বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়নি।
রিপাবলিকানরা ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প সম্পর্কে ‘মিথ্যা বর্ণনা তৈরি করতে সুনির্দিষ্টভাবে ছবি নির্বাচন করা’র অভিযোগ এনেছেন।
কংগ্রেস কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি রবার্ট গার্সিয়া বলেন, এই ছবিগুলো এপস্টেইন এবং বিশ্বের ক্ষমতাশালী কিছু পুরুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তিনি বিচার বিভাগকে সব ফাইল প্রকাশের দাবি জানান।
যৌন পাচারের অভিযোগে বিচারের অপেক্ষায় থাকার সময় ২০১৯ সালে এপস্টেইনের আত্মহত্যা ও তাঁর ক্ষমতাধর বন্ধুদের সঙ্গে সংযোগ নিয়ে বহু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক চাপে বিচার বিভাগকে ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে এপস্টেইন সম্পর্কিত সব নথি প্রকাশ করতে হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প এই প্রকাশনাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, অনেকে এপস্টেইনকে চিনতেন এবং তার সঙ্গে ছবি তুলেছিলেন।