ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনে ভোটারদের মধ্যে নির্বাচনি উচ্ছ্বাস বাড়ছে। আসনের বিভিন্ন অলি-গলিতে ইতোমধ্যেই দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের বিলবোর্ড ও ফেস্টুনে শোভা পাচ্ছে এলাকা।
জামায়াতের একক প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম ও বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রতিদিনই সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মৌলভীবাজার-১ আসনের বড়লেখা উপজেলায় ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং জুড়ী উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন রয়েছে। দুই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৬০ হাজার ৯৩৮ জন। এর মধ্যে বড়লেখায় ভোটার ২ লাখ ১১ হাজার ৬৬৮ জন (পুরুষ ১ লাখ ৭ হাজার ৯৫, নারী ১ লাখ ৪ হাজার ৫৭৩) এবং জুড়ীতে ভোটার ২ লাখ ৪৯ হাজার ২৭০ জন।
বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী এখনো মাঠে সক্রিয় থাকলেও দল এখনো চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করেনি। গত ২৭ অক্টোবর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিংয়ে প্রিনসিগন্যাল না আসায় প্রার্থীরা নিজ নিজ অবস্থান ধরে রেখেছেন। বর্তমানে স্থানীয় বিএনপি তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে নির্বাচনি প্রচারণা চালাচ্ছে।
বিএনপির প্রার্থী হতে মাঠে আছেন তিনজন—জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমদ মিঠু, সাবেক উপদেষ্টা ও কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুল হক সাজু, এবং যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা ও লন্ডন চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট ড. মুদাব্বির হুসেন মুনিম।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী থেকে এক বছর আগেই একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন জেলা জামায়াতের শূরা সদস্য ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা আমিনুল ইসলাম। ২০১৮ সালেই কেন্দ্র থেকে তাকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।
তিনি ও তার সমর্থকরা প্রতিদিনই মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও গ্রামাঞ্চলে পথসভা, মতবিনিময় সভা ও গণসংযোগ চালাচ্ছেন। জামায়াতের কর্মীরা আলাদাভাবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন দিন-রাত।
জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রার্থী বিজয়ী হলে দুর্নীতিমুক্ত, মানবিক ও আধুনিক উপজেলা গঠন, বেকারদের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান, মাদকমুক্ত সমাজ, কৃষি পণ্যের আধুনিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে।”
ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী শরীফুল হক সাজু বলেন, “আমরা তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো ও ১৮০ দিনের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে মাঠে কাজ করছি।”
একইভাবে নাসির উদ্দিন আহমদ মিঠু এবং ড. মুদাব্বির হুসেন মুনিমও এলাকাব্যাপী লিফলেট বিতরণ, গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভায় ব্যস্ত রয়েছেন।
উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি নছিব আলী বলেন, “ধানের শীষ যেই পাবেন, আমরা সবাই মিলে তার পক্ষে কাজ করবো। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ৩১ দফা ও ১৮০ দিনের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে।”
এদিকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আহমদ রিয়াজ উদ্দিন, বিএনপির সাবেক এমপি মরহুম এডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার জহরত আবিদ চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদের আব্দুর নুর তালুকদার, এনসিপির তামিম আহমদ, খেলাফত মজলিশের মুলভী লোকমান আহমদ ও জমিয়তের অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল ইসলামও মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
