আল্টিমেটাম ও মান-অভিমানের পর অবশেষে শাপলা কলিকেই প্রতীক হিসেবে মেনে নিয়েছে তরুণদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রবিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পরই সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে প্রতীক মেনে নেওয়ার কথা জানান দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, এবার ধানের শীষের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে শাপলা কলিতে।
এর পরপরই উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন নেতাকর্মীরা। তারা আগামী নির্বাচনে এ প্রতীককে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখছেন। ফেসবুকে কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের নেতারা বিভিন্ন স্লোগান সহ পোস্ট দিয়েছেন।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন— ‘গ্রাম, শহর, অলিগলি জিতবে এবার শাপলা কলি।’
একই দিন বিকালে বরিশাল শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে দলীয় কর্মসূচিতে দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহও নেতাকর্মীদের নিয়ে শাপলা কলির স্লোগান তোলেন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করছেন অনেকে।
সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, নিজের ফেসবুক আইডিতে লেখেন— ‘দেশ জনপদ, রাস্তা গলি, জিতবে এবার শাপলা কলি।’
যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে শাপলা কলি ফুল হাতে নিয়ে হাস্যোজ্জল ছবি শেয়ার করেছেন। তার সঙ্গে ছবিতে রয়েছেন মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. খালেদ সাইফুল্লাহ। ক্যাপশনে তাসনিম জারা লেখেন— ‘আজকের বিজয়ী টিমের সঙ্গে। সবাই মিলে স্লোগান তুলি, জিতবে এবার শাপলা কলি।’
যদিও এত দিন পুর্ণাঙ্গ শাপলা না হলে, প্রতীক না নেওয়ার কথা বলেছিলেন নেতারা।
গত ৩০ অক্টোবর শাপলা কলি প্রতীক গেজেটভুক্ত করার পরই এক অনুষ্ঠানে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেছিলেন, ‘আমাদের দলকে বাচ্চাদের দল হিসেবে ইঙ্গিত করেই গেজেটে শাপলা কলি প্রতীক দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যেমনটি বড় দলগুলো আমাদেরকে মূল্যায়ন করে থাকে। এটি এক ধরনের প্রতারণা। যেখানে কোনও ধরনের আইনি কারণ নেই। তবে কলি যখন পেয়েছি, পূর্ণাঙ্গ শাপলা আদায় করবো।’
গত ৩১ অক্টোবর দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন ফেসবুকে লেখেন— ‘এনসিপি সব সময় বলেছে শাপলার কোনও বিকল্প নেই। বিকল্প কেবল শাপলার ভেতর থেকেই হতে হবে। আমরা নানারকম শাপলার ডিজাইন উপাস্থাপন করেছি। নির্বাচন কমিশন শাপলার ভেতর থেকেই শাপলা কলিকে বিকল্প হিসেবে হাজির করেছে। শাপলার বিকল্প হিসেবে শাপলা কলি কেমন দৃষ্টিনন্দন আকৃতির হলো, সেটা আমরা বুঝতে চাই।’
এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা পূর্ণাঙ্গ শাপলাই চেয়েছিলাম। তবে সামগ্রিক বাস্তবতা বিবেচনা করে আপাতত শাপলা কলিকেই মেনে নিচ্ছি। তবে আমরা ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছি, নির্বাচন কমিশন আমাদের বিষয়ে বারবার ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শাপলা কলির মাধ্যমেই আগামীর রাজনীতিতে নতুন মাইলফলক তৈরি হবে।’
