December 2, 2025, 4:33 pm
সর্বশেষ সংবাদ:
ইউনূসকে বলেছিলাম, ‘একসঙ্গে বসে কফি খাই, আমার ভুল নিয়ে আলোচনা করি কিন্তু দেখা করেননি’ ১১ মাসে ধর্ম অবমাননার অজুহাত ঘিরে ৭৩টি ঘটনার শিকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায় চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন বেগম খালেদা জিয়া: ডা. জাহিদ উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ দিচ্ছে চীন, আবেদন স্নাতকোত্তর-পিএইচডিতে খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা, পাবেন এসএসএফ নিরাপত্তা তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমদ আইপিএলে মোস্তাফিজের ভিত্তিমূল্য ২ কোটি, সাকিবের ১ কোটি আগামী নির্বাচনে বিএনপি ৩০% ভোট পাবে, জামায়াত ২৬% খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা নরেন্দ্র মোদির- ধন্যবাদ জানালো বিএনপি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূকম্পন অনুভূত, উৎপত্তিস্থল মিয়ানমার

ইউনূসকে বলেছিলাম, ‘একসঙ্গে বসে কফি খাই, আমার ভুল নিয়ে আলোচনা করি কিন্তু দেখা করেননি’

Reporter Name
  • Update Time : Tuesday, December 2, 2025
  • 5 Time View

দুর্নীতির মামলায় বাংলাদেশের আদালতে নিজের দুই বছরের কারাদণ্ড হওয়ার রায়কে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ‘প্রতিহিংসা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক।

তার ভাষায়, পুরো বিচারপ্রক্রিয়াটি ছিল ‘বিশৃঙ্খল, হাস্যকর ও প্রহসনমূলক’।

সোমবার রায়ের পর যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজে এমন প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন লেবার পার্টির এই এমপি।

তিনি বলেন, “আমি পুরো ব্যাপারটা নিয়ে হতবাক। দেড় বছর ধরে আমার বিরুদ্ধে যেসব বিদ্বেষমূলক অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমার সঙ্গে একবারও যোগাযোগ করা হয়নি।

“আমি দায়িত্বশীল থাকার চেষ্টা করেছি। যুক্তরাজ্যে আইনজীবী নিয়োগ করেছি, যারা বহুবার বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছে, কিন্তু কোনো জবাব পাইনি।”

তিনি বলেন, “এরপর আমি বাংলাদেশেই একজন আইনজীবী নিয়োগের চেষ্টা করি। তিনি আদালতে গিয়ে জানতে চেয়েছিলেন কী হচ্ছে। কিন্তু তাকে ভয় দেখানো হয়, হুমকি দেওয়া হয়, আর তিনি মামলা থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন।”

গত জুনে লন্ডন সফরে যান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ওই সময় সাক্ষাৎ চেয়ে ইউনূসকে চিঠি পাঠানোর কথা বলেছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক।

সেই চিঠির কথা তুলে ধরে স্কাই নিউজকে তিনি বলেন, “তাকে আমি বলেছিলাম, ‘ঠিক আছে, একসঙ্গে বসে কথা বলি, কফি খাই, আমার ভুল নিয়ে আলোচনা করি। কিন্তু তিনি দেখা করতে অস্বীকার করেন।”

বাংলাদেশ থেকে কোনো সমন পাঠানো কিংবা যোগাযোগ করা হয়নি দাবি করে টিউলিপ বলেন, “আমাকে খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন নয়। আমি একজন সংসদ সদস্য। শুধু হাউস অব কমন্সে কিছু কাগজ পাঠালেই হতো, আমি জবাব দিতাম।

“ফলে আমার কাছে মনে হচ্ছে, আমি যেন ‘কাফ্কার দুঃস্বপ্নের’মধ্যে আছি। আমি একদিকে স্বাভাবিক সংসদীয় কাজ করছি, অন্যদিকে আমাকে বাংলাদেশে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে। আর দোষী হওয়ার খবরটা জানতে পারছি কেবল সংবাদপত্র পড়ে।”

যে মামলায় টিউলিপের সাজা হলো, তাতে অভিযোগ ছিল, ঢাকা শহরে বাড়ি বা আবাসন সুবিধা থাকার পরেও ‘সেই তথ্য গোপন করে আইন ভেঙে দুর্নীতির মাধ্যমে’ শেখ রেহানা পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দ নেন। শেখ হাসিনা ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে বোনকে প্লট বরাদ্দে ‘সহায়তা’ করেন। আর ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক তার মা রেহানাকে প্লট পাইয়ে দিতে খালা শেখ হাসিনাকে ‘প্রভাবিত’ করেন।

মামলার বিষয়ে টিউলিপ বলেন, “অভিযোগে বলা হয়েছে, আমি ব্রিটেনে বিরোধী দলের এমপি থাকাকালে আমার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমার খালাকে রাজি করিয়েছি, যেন তিনি আমার মাকে কোনো এক জায়গায় জমি কিনতে দেন।

“আমার খালার বয়স আমার চেয়ে দুই গুণ। তিনি আমার চেয়ে বহু বেশি ক্ষমতাবান এবং আমার জন্মের আগ থেকেই তিনি রাজনীতি করেন। আমি জানতে চাই, আমি যে তাকে প্রভাবিত করেছি, তার কী প্রমাণ আছে? পুরো বিষয়টাই ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টের’ মতো মনে হয়, যা বিশৃঙ্খল, হাস্যকর ও সম্পূর্ণ প্রহসনমূলক।”

টিউলিপ বলেন, “আমাদের দেশের ডমিনিক গ্রিভ, রবার্ট বাকল্যান্ড ও ডেভিড গকের মতো ব্যক্তিদের সবাই বলেছেন, এটি ত্রুটিপূর্ণ ও সাজানো মামলা। তারা আমার রাজনৈতিক মতের লোক নন, তবুও বলেছেন বিষয়টি কতটা অন্যায়।”

মুহাম্মদ ইউনুসকে উদ্দেশ করে টিউলিপ বলেন, “এমন বিচারপ্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তার লজ্জিত হওয়া উচিত। তিনি ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা থেকে আমাকে হেনস্থা করছেন, আমার সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছেন এবং একজন গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ব্রিটিশ এমপিকে বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতির মধ্যে টেনে আনছেন।”

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর থেকেই ব্রিটিশ রাজনীতিতে সমালোচনার মুখে পড়েন টিউলিপ সিদ্দিক। সমালোচনার মুখে গেল জানুয়ারিতে আর্থিক সেবা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।

এখন সাজা হওয়ায় পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগের কোনো চিন্তা আছে কিনা, সেই প্রশ্নে টিউলিপ বলেছেন, “লেবার পার্টি আগেই বলেছে তারা এই রায়কে স্বীকৃতি দেয় না, কারণ প্রক্রিয়াটি ত্রুটিপূর্ণ। তাই আমি পদত্যাগের কথা বিবেচনা করছি না।”

টিউলিপের অভিযোগ, “আমার স্বজনদেরও টার্গেট করা হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে আমার খালাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। যতদূর দেখছি, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা যেন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © dainikkhobor.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com